জুলাই জাতীয় সনদে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবের বাস্তবায়ন নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনায় ধর্মঘট বা সমঝোতা হয়নি। আজ (১১ সেপ্টেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আয়োজিত এই বৈঠকে ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। সকাল সকাল শুরু হওয়া আলোচনা মধ্যাহ্নভোজ বিরতিতে বন্ধ থাকলে, সন্ধ্যার দিকে পুনরায় শুরু হয়। তবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিজেদের পক্ষে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েই থাকেন। বিএনপি মনে করে, সংবিধানের সংশোধন বা সংস্কার কার্যকর করতে হলে একমাত্র জাতীয় সংসদই যথেষ্ট। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামি বলছে, রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা উচিত। এনসিপি আবার দাবী করছে, নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ গঠন ও এর মাধ্যমে এই সংস্কার সম্ভব। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বা গণভোট ছাড়া এ সংস্কার আইনসঙ্গত হবে না। এতে বিপ্লবের ব্যর্থতা আনবে।’ অন্যদিকে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানান, ‘পুরোনো সংবিধানকে ঝাড়ু মারার মতো কাজ করে হবে না, নতুন সংবিধানই একমাত্র সমাধান।’ আবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় বিশেষ আদেশ বা গণভোট সাংবিধানিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এখন সনদ কার্যকর হলে, দেশের দুটি সংবিধান চালু থাকবে এবং কেউ কেউ আদালতেও চ্যালেঞ্জ করতে পারে।’ তিনি প্রস্তাব রাখেন, সব দল এখনই সনদে স্বাক্ষর করুক এবং ভবিষ্যত নির্বাচনী ইশতেহারে এর বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করুক। আলোচনা শেষে অালোচকদের কাছ থেকে ঐকমত্যের অভাব প্রকাশ করে অলোচনার চলমান রূপরেখা পাঠানো হয়। ঐকমত্যের ব্যাপারে অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, বিতর্কিত বিষয়গুলি অন্তর্বর্তীস্থানে বাস্তবায়ন সম্ভব। তবে তিনি বলেছেন, আগামী রোববার আবার বৈঠকের দিন ধার্য আছে। প্রাথমিকভাবে দু’টি সিদ্ধান্তে ঐকমত্য হয়েছে—সংবিধান সংশ্লিষ্ট নয় এমন প্রস্তাবগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের অধ্যাদেশে বাস্তবায়ন সম্ভব এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে স্থায়ীভাবে এই সংস্কার আনা যেতে পারে। চূড়ান্ত ভাষ্য এখনো দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে, যাতে সব দল দুজন করে প্রতিনিধির নাম প্রদান করে। তবে, চূড়ান্ত বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ধারিত না হওয়ায়, সব দলই কি সই করবে—এ প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা।