কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে একটি নকল সার তৈরির কারখানা ও সার জব্দ করেছে। এই অভিযানে নকল সার কারখানার মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার সময় পৌরসভার নাড়িকেলরাড়ি খেয়ারপাড় এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত এ কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে একটি চক্র সরাসরি বহু কোম্পানির মোড়কে নকল সার বিক্রি করে আসছিলেন। এক সৈচিহ্নিত প্রতিষ্ঠানের একজন প্রতিনিধি ওই দিন বিকালে একটি সার কোম্পানির নিকট থেকে স্থানীয় একজনের মাধ্যমে অনেক কম দামে নকল সার কিনতে দেখেন। সন্দেহ হওয়ায় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং পরে অনুসন্ধান চালান।
তদন্ত শেষে দেখা যায়, সিদ্দিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে নকল সার প্রস্তুত ও মোড়কজাতের বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া যায়। তাকে স্থানীয় কৃষি বিভাগকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে যান। অভিযোগ উঠেছে, সিদ্দিকুর দীর্ঘদিন ধরে নানা কোম্পানির পণ্য নকল করে বাজারে বিক্রি করে আসছেন।
সদ্য পাওয়া অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তিনি জীপসাম, ম্যাগনোশিয়াম, ডিএপি ও ডলো চুন মিশিয়ে নকল সার তৈরি করতেন এবং পরে মনোভিট, সালফাভিট, গ্রীনভিট, থট, গ্রীনার, হাদিয়া ভিট ও সিলভা গোল্ডের প্যাকেটে ভরে বাজারে ছড়িয়ে দিতেন। অবিশ্বাস্যভাবে এই নকল সার কৃষকদের জমিতে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু ফলাফল ভালো না হওয়ায় তারা প্রতারিত হন।
এ বিষয়ে এস-কিউ নাফিস ক্রপ কেয়ার লিঃ এর প্রতিনিধি আতিকুর রহমান জানান, এই প্রতারক সারগুলো আমাদের কোম্পানির পণ্য হিসেবেও মোড়কজাত করতেন। এগুলো কৃষকদের জন্য অকার্যকর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, ভেজাল ও মানহীন সার বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ম লঙ্ঘন করা হয় বলে ভ্রাম্যমাণ আদালত এ জরিমানা ও সাজা দিয়েছেন। অভিযানে সার তৈরির নানা সরঞ্জামও জব্দ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নয়ন কুমার সাহা জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়, আর অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় সামগ্রী জব্দ করে ধ্বংসের নির্দেশ দেওয়া হয়।