এক সপ্তাহের আন্দোলনের পর অবশেষে নেপালের স্কুলগুলো আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছে। সম্প্রতি দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাঠমান্ডু মহানগর কর্তৃপক্ষ (কেএমসি) ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকেই সরাসরি ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে।
কেএমসির শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কেশব গ্যাওয়ালি জানিয়েছেন, রবিবার থেকে শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে ক্লাস চালুর প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, স্কুলগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাবাহ এবং অবকাঠামোর ক্ষতি পরীক্ষা করে দেখা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে কেএমসি আরও জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের বিষয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে এবং পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে, স্কুলগুলোতে মনোসামাজিক পরামর্শও দেওয়া হবে। যারা অভিভাবকের সঙ্গে আসতে পারছেন না, তাদের জন্য অনলাইন ক্লাসের সুযোগও দেওয়া হয়েছে।
অভ্যুত্থানের পেছনে মূল কারণ ছিল দুর্নীতি, সরকারবিরোধী আন্দোলন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপ্রকাশ্য নিষেধাজ্ঞা ও নিপীড়নের প্রতিবাদ। গত ৮ সেপ্টেম্বর, তরুণ সমাজ রাস্তায় নেমে আন্দোলনে যোগ দেয়। নিরাপত্তা বাহিনী জলকামান, টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট এবং গুলি ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে চেষ্টা করে। বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি হয়।
এমন পরিস্থিতিতেও আন্দোলনকারীরা ক্ষিপ্ত হয়নি; বরং ছবি আরও জোরদার হয়। আন্দোলনের চাপে, অবশেষে, প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বিভিন্ন নেতার বাড়ি ও সরকারি ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া যায়।
নেপালের এই সহিংস আন্দোলনে এখনো পর্যন্ত অন্তত ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, ১২ সেপ্টেম্বর রাতে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কি। আন্দোলনের দাবির প্রেক্ষিতে, প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পোড়েল ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
সুত্র: খবর হাব
আজকের খবর/ এমকে