তরুণ প্রজন্মকে আরও সাহসী, উদ্যমী এবং নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বললেন, তরুণরা যদি সক্রিয় থাকেন, তাহলে দেশের কোনো সমস্যা আর অমীমাংসিত থাকাই সম্ভব নয়। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, যুবসমাজের প্রত্যেক সদস্যকে আমি উৎসাহ দিয়ে বলব, তোমার মেধা, শক্তি ও সৃজনশীলতা দিয়ে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখো। তোমাদের সাফল্য কেবল নিজস্ব স্বীকৃতি নয়, বরং এটি অন্যদের জন্যও অনুকরণীয় হয়ে উঠুক। তিনি উল্লেখ করেন, তরুণরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যা কার্যত অমীমাংসিত থাকতেই পারে না।
তিনি আরও বলেন, আজকের দিনটি আমাদের তরুণদের শক্তিকে উৎসাহিত করার। এই শক্তিই আমাদের জাতির চালক। আমি নিশ্চিত, যখন একটি দেশের যুবসমাজ উদ্যমী, বলীয়ান ও উদ্ভাবনী শক্তিতে পরিপূর্ণ, তখন কোনো প্রতিবন্ধকতা তাদের অগ্রগতি থামাতে পারে না।
ড. ইউনূস সবাইকে উৎসাহিত করে বলেন, আমাদের তরুণেরা কেবল স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নয়, বরং সমাজের নীতি নির্ধারক, উদ্ভাবক ও পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবেও নিজেদের তুলে ধরবে। এর জন্য তাদের আত্মবিশ্বাস, প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং নেতৃত্বের গুণাগুণ বিকাশে মনোযোগী হতে হবে।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজকের এই স্বীকৃতি কেবল একটি সম্মাননা নয়, এটি তোমাদের জন্য একটি শক্তিশালী আহ্বান। আরও সাহসী হও, নেতৃত্ব দাও এবং সমাজের কল্যাণে নতুন ধারণা ও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করো।
তিনি আশ্বাস দেন, সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তোমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। তরুণরাই শিশুদের রোগমুক্ত রাখতে স্বাস্থ্যখাতে ছোট উদ্যোগ নিতে পারে, শিক্ষাক্ষেত্রের মান উন্নত করতে এবং পরিবেশ রক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা সম্ভব। মনে রাখো, তোমাদের ছোট ছোট প্রচেষ্টা দেশের জন্য বড় অর্জনের ভিত্তি।
ড. ইউনূস বলেন, স্বেচ্ছাসেবার পথ সহজ নয়। এ পথে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয় — সময়, অর্থ, মানসিক চাপ। তবে এভাবেই ধৈর্য্য, সহনশীলতা ও নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন যে, তরুণেরা নতুন নীতি, যুগান্তকারী ধারণা ও সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবে সমাজে ভূমিকা রাখতে পারে। তোমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই বাংলাদেশকে একটি উন্নত, মানবিক ও উদ্ভাবনী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবে।
তার বক্তব্যে আরও তিনি বলেন, তরুণেরা স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ রক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক ন্যায় বিচারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তারা ইতিহাসের দৌলত দেখিয়ে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং দেশের বিভিন্ন যুগের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করেছে।
আজকের খবর/বিএস