বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ থেকে বিরত থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, আমি আবারও স্পষ্ট করে বলছি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে একটি দল গঠিত হবে। যদি এই দল নির্বাচন করে, তবে এটি দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে এবং ইমরান খানর মতো শক্তিশালী দল হিসেবে তুলে ধরা হবে। সম্প্রতি তিনি এই মন্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক বক্তৃতায় করেন।
ফজলুর রহমান আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে একজন করে প্রার্থী দাঁড়াবে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, এই দলের মোট ৩০০ প্রার্থী হবে। তিনি বলেন, আমাকে বলা হয় আমি বাতিল হয়েছি, কিশোরগঞ্জ সম্মেলনে যেতে পারছি না। এটা মোকাবেলা করা কঠিন, কারণ আমি মানুষের জন্য কাজ করে এসেছি। আমি জেল খেটেছি, নির্যাতনের শিকার হয়েছি, এমনকি দেশপ্রেমের সাজে মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতি সয়েছি। তিনি বলেন, আমি পাকিস্তানী দমন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলাম এবং দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে বিখ্যাত বক্তৃতা দিয়েছি, যা ইতিহাসে রেকর্ড হয়।
ফজলুর রহমান বলেন, বর্তমানে তার নেত্রী সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং তিনি তাকে না দেখার কারণে কিছুটা উদ্বিগ্ন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আমি নানা বক্তৃতা করেছি, বিএনপির বিভিন্ন নেতার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি কণ্ঠ উচ্চারণ করেছি। এই কারণে আমাকে তিন মাসের জন্য দলীয় সকল কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। এতে আমি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি অনুরোধ করেন, সম্মেলনের আগে এই সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক।
মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে নতুন একটি দল গড়ার পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি দল তৈরি হবে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আপনারা থাকবেন, আমি থাকবো কি না, তা পরে দেখা যাবে।
ফজলুর রহমান আরো বলেন, আমি বিএনপির জন্য কাজ করছি। আমার সম্মেলন আগামী ২০ সেপ্টেম্বর। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর, খালেদা জিয়া আমাকে বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব দেন এবং কিশোরগঞ্জে দল গঠন করেন। আমি তখন দলের নেতা ছিলেন। আমি হামলার শিকার হয়েছি এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এমনকি আমি সবাইকে দেখিয়ে দিলাম, আমি অকুতোভয়ভাবে সকল বিপদে লড়াই করেছি।
তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জে আমি আট বছর নেতৃত্ব দিয়েছি। এখন আমি ঢাকায় বসে থাকব না, যখন হাজার হাজার নেতাকর্মী সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। আমি মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি, তবে কেউ বলতে পারে না আমি সম্মেলনে অংশ নেব না। আমি জানি আমার দলের অনেক নেতা-কর্মী আমার পাশে থাকবেন।
ফজলুর রহমান জানান, যখন একজন মানুষের বয়স ৬০ বছর অতিক্রম করে, তখন তার সময় মূল্যবান হয়। আমার বয়স ৭৮ বছর, এখন এই পরিস্থিতিতে আমি যেন রাজনৈতিক কাজ চালিয়ে যেতে পারি, সেটাই চান। তবে তিন মাস ধরে আমাকে ঘরে বসে থাকতে বলা হয়েছে, যা আমি মানতে পারছি না। তিনি বলেন, সম্মেলনের আগে আমার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করতে পারে, কিন্তু তারা তা করছে না।
অতএব, তিনি কোন পথে যাবেন, প্রশ্ন উঠেছে। একদিকে থাকতে চান রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার選া, অন্যদিকে যদি বিএনপি তার সাসপেনশন তুলে না নেয়, তবে তার জন্য আর কোনও উপায় থাকবে না। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, যদি বিএনপি তার অবসান না করে, তবে তার সামনে দুটি পথ—রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া বা অন্য খানে গিয়ে নতুন পথ খোঁজা। কারণ, তার বয়স ৭৮ বছর, আর এই বয়সে নতুন করে জীবন চালাতে পারা খুবই কঠিন। তিনি কেআকে বলেন, আমি যদি চাচ্ছি তো, আমার শাস্তি হয়ে গেছে। একদিনের জন্যও আমি রাজনৈতিক কাজে থাকি না।
ফজলুর রহমান আরও জোর দিয়ে বলেন, তিনি বিএনপির মতো দল গড়বেন না—এটি একেবারেই অপ্রচলিত কথা। তবে থাকলে থাকবেন, নইলে quietly বসে থাকবেন। তার জন্য তিনি নিজের জীবন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। সে জন্য তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, দেশে থাকা দুই কোটি মানুষের মাঝে ৯৯ শতাংশ তার সমর্থক রয়েছে। শেষ তিনি বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে তিনি সবকিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত, শুধু দেশের জন্য।