সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর প্রদেশের আল-ফাশ শহরে একটি মসজিদে ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত এবং প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির রিপোর্টে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে, যখন আস্তানা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্রার্থনা করতে ছিলেন। ওই সময়ে হামলা চালায় আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। তবে এখনো এই গোষ্ঠী নিজেদের দায়িত্ব স্বীকার করেনি, তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে যে তাদেরই অংশগ্রহণ রয়েছে।
স্থানীয় এক অধিবাসী বিবিসিকে বলেন, প্রার্থনার সময় এই ভয়ঙ্কর আক্রমণ হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, দুই বছরের বেশি সময় ধরে সুদান সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ অব্যাহত আছে, যেখানে আল-ফাশের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলো লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এ অঞ্চলের দখল নিতে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে আরএসএফ, যা দারফুরের সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। এই সংঘর্ষে শহরের তিন লাখেরও বেশি সাধারণ নাগরিক নানা ঝুঁকিতে পড়েছেন, তারা লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করছেন।
ইয়েল ইউনিভার্সিটির হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাবের (এইচআরএল) বিশ্লেষণে দেখা গেছে, স্যাটেলাইট চিত্রে এই এলাকাগুলোর বড় অংশ এখন আরএসএফের অধীনে চলে এসেছে।
অন্যদিকে, জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এই সংঘাতের প্রকৃতি বদলে গিয়ে জাতিগত পর্যায়েও পরিণত হচ্ছে। সেখানকার দুপক্ষ সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে হামলা চালানোর পাশাপাশি একটি জাতিগত নির্মূলের পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নথি ও প্রতিবেদনে জানা গেছে, দখলকৃত এলাকাগুলোতে অ-আরব সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। ডক্টরস উইদআউট বর্ডার্স সম্প্রতি জানিয়েছে, আল-ফাশ শহর থেকে অ-আরব জনগোষ্ঠী বিতাড়নের পরিকল্পনাও প্রকাশ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে।
বিরোধীদের এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে আরএসএফ, তারা বলছে, তারা কোনও জাতিগত সংঘাতে জড়িত নয়।
সাম্প্রতিক এই সংঘাতের কারণে সূচনালগ্নে পড়ে থাকা সমাজ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।