দীর্ঘ ২৩ মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে নজিরবিহীন আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। হামাস তুলে ধরার নামে কঠোর অভিযান চালিয়ে গাজা দখলের পরিকল্পনা সম্পন্ন করতে গিয়ে সেখানে ব্যাপক গণহত্যাও চলে যায় দখলদার দেশটির। বিশ্বজুড়ে কঠোর নিন্দা সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে নিজেদের আগ্রাসন চালিয়ে যেতে পাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে দেরিতে হলেও এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে এবার গাজায় গণহত্যা বন্ধের জন্য মুখ খুলেছেন বিভিন্ন দেশের নেতৃত্বও। এই তালিকায় শেষ পর্যন্ত নাম উঠে এসেছে এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী দেশ জাপানের।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা সতর্ক করে জানিয়েছেন, যদি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও স্বীকৃতি স্বার্থে বাধা সৃষ্টি হয়, তাহলে জাপান কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। তিনি মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে এই হুঁশিয়ারি দেন। খবর টাইমস অব ইসরায়েল থেকে নেওয়া।
আলোচনায় ইশিবা উল্লেখ করেন, জাপান এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি, কিন্তু এটি সময়ের ব্যাপার মাত্র। জাপানের জনগণ দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে থাকায় প্রাথমিকভাবে উপযুক্ত সময়ে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা একাধিকবার দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন, যা জাপানের জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার আরও বলেন, ভবিষ্যতে যদি ইসরায়েল কোনোভাবেই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করে, জাপান তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এই পদক্ষেপগুলো হবে শক্তপোক্ত ও দৃঢ়।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার ফ্রান্স ও সৌদি আরবের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠেছে। ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী কিছু দেশ, যেমন ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগাল, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
অবশ্য, জাপানও এই স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুত ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কারণে টোকিও পিছিয়ে আসে। বর্তমানে বিশ্বে জাতিসংঘের ৮০ শতাংশ সদস্য দেশই ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।