১৩৬ রানের লক্ষ্য খুব বেশি না হলেও, বাংলাদেশ দলের জন্য এটি আরও কম হতে পারত যদি তারা কিছু সহজ ক্যাচ না ফেলত। পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচে বাংলাদেশের ভুলের শিকার হতে হয়েছে, যার ফলে তারা ১১ রানে হেরে ফাইনালে উঠার সুযোগ হারিয়েছে। বাংলাদেশ দলের হেড কোচ ফিল সিমন্স মনে করেন, তিনটি সহজ ক্যাচ ফেলে দেওয়া এবং ব্যাটারদের খারাপ সিদ্ধান্তই এই হারের মূল কারণ। দুবাইয়ে ফাইনালে উঠানোর লড়াইয়ে পাকিস্তান শুরুতেই চাপ সৃষ্টি করে। পাকিস্তানের স্কোর ছিল ৫১/৫ যখন তাদের পাঁচ উইকেট পড়ে, কিন্তু সাথে ব্যাটসম্যানরা আগের থেকে আরও ভালো খেলতে শুরু করে। ১২তম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির সহজ ক্যাচ নুরুল হাসান ও শেখ মেহেদী ফেলে দেন। এরপর আফ্রিদি ১৩ বলে দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে ১৯ রান করেন, পাকিস্তানের পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেয়। আফ্রিদির আউটের পর পারভেজ হোসেন ইমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ ফেলেন, যিনি তখনো রান করেননি। শেষ পর্যন্ত মোহাম্মদ নওয়াজ ১৫ বলে ২৫ রান করেন, যেখানে ছিল দুটি ছক্কা ও একটি চার। দুবাইয়ের বিখ্যাত ‘রিং অফ ফায়ার’ ফ্লাডলাইটের আলোয় অনেক সময় বল পরিষ্কার দেখা যায় না, তবে সিমন্স মনে করেন না যে আলো ক্যাচ ফেলার পেছনে দায়ী ছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন শাহিন ও নওয়াজের ক্যাচ ফেলি, তখনই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। এর আগে আমরা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। কিছু ক্যাচের পিছনে আলোর অবদান থাকতে পারে, কিন্তু সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।’ ব্যাটিং নিয়ে সিমন্স বলেন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় উল্লেখযোগ্য হলেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যাটাররা সিদ্ধান্তে ভুল করেছে। তারা বেশি ছক্কা মারলেও অযথা বড় শট খেলতে গিয়ে উইকেট হারিয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, কেন আমাদের ব্যাটাররা কিছু ওভারে খেলা শেষ করতে চেয়েছিল। সিমন্স ব্যাখ্যা করেন, ‘বিশেষ কোনো ওভারে খেলা শেষ করতে চাওয়া উচিত ছিল না। কিন্তু সিদ্ধান্তে ভুলের কারণে আজ আমাদের হারতে হয়েছে। ভালো শট নির্বাচন ছিল না।’ ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন কি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে? সিমন্স মনে করেন না। তার মতে, ‘আমরা একাদশে একই উইকেটে আগেও বেশ ভালো স্কোর চেজ করেছি। আজ ভুলের জন্য ব্যাটিং সিদ্ধান্তের ভুল হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখনো আমাদের স্ট্রাইকরেট শীর্ষ পর্যায়ের নয়, তবে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। মূল সমস্যা হলো পার্টনারশিপ গড়তে না পারা।’ শেখ মেহেদী হাসান ៤ নম্বর পজিশনে ব্যাটিং করেছে, যেখানে গড়ে স্ট্রাইক রেট ১০০ এবং গড় ১১। এ রকম একজন ক্রিকেটার কি আসলেই এত গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে মানানসই? সিমন্স এ বিষয়ে অদ্ভুত যুক্তি দেন, ‘এমন একজনকে পাঠানো হয়েছে যিনি তখন পেসারদের মোকাবিলা করতে পারতেন। ফাস্ট বোলারদের বিরুদ্ধে খেলছিলাম তখন, ফলে সে সুবিধায় থাকত। যদি সেটি নিচে পাঠাতাম, তাহলে শুধু স্পিনারদের মুখোমুখি হতে হতো। আমার কাছে তখনো জাকের ও শামীম ছিল, যারা স্পিনারদের ভালো খেলে। এটাই ছিল আমাদের ভাবনা।’ দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট স্ট্রাইকরেটে অখুঁত। তবে সিমন্স বিশ্বাস করেন যে, ধীরে ধীরে তারা এই সমস্যার সমাধান করছে। কিন্তু সেই সমস্যা মূলত জুটি গড়তে না পারায় দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘স্ট্রাইকরেটের পার্থক্য ধীরে ধীরে কমে আসবে যত বেশি আন্তর্জাতিক খেলা খেলবে আমাদের ক্রিকেটাররা। তারা শিখবে কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। আমি একমত, আমাদের স্ট্রাইকরেট এখনো শীর্ষ পর্যায়ের নয়, তবে ছক্কা মারার ক্ষমতা রয়েছে। মূল সমস্যা হচ্ছে, আমরা দীর্ঘ ইনিংস খেলতে পারছি না ও পার্টনারশিপ গড়তে পারছি না।’