আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। জাতিসংঘের পর্যটন সংস্থা এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘টেকসই উন্নয়নে পর্যটন’, যা আমাদের সামনে কাজের লক্ষ্যকে স্পষ্ট করে দেয়।
পর্যটন উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ এটি বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি, মানুষের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরির সুযোগ তৈরি করে। পর্যটনের মাধ্যমে দেওয়া যায় শান্তি, সৌহার্দ্য এবং সমঝোতার বার্তা। বিশ্বের শান্তি ও সমাজের সুস্থ সমন্বয়ের জন্য পর্যটনের কার্যকর ভূমিকা অপরিসীম। এটি শুধু শান্তির বার্তা দেয় না, এর মাধ্যমে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত বিভিন্ন সহিংসতা কমানোর উপায়েও অবদান রাখে।
দিবসের প্রেক্ষিতে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সম্ভাবনাময় পর্যটন দেশ। এই শিল্পের যথাযথ উন্নয়নে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, পর্যটন বর্তমানে বিশ্বজুড়ে টেকসই উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে পর্যটন শিল্পের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।
প্রফেসর ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, এর বিকাশের ফলে পর্যটন শহর ও অঞ্চলগুলোর উন্নতি হচ্ছে, পাশাপাশি স্থানীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পরিবেশের সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ছে। এই প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের নির্ধারিত ‘টেকসই উন্নয়নে পর্যটন’ প্রতিপাদ্যটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
১৯৮০ সাল থেকে জাতিসংঘের পর্যটন সংস্থা বিশ্বব্যাপী এই দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করে আসছে। বাংলাদেশে এই দিবসটি উত্তেজনা ও উদ্দীপনার সঙ্গে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপিত হয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট দপ্তর, পর্যটক পুলিশ ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সংগঠন ব্যাপক আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে।
বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে দেশে বিদেশি নাগরিকের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৬৬৫ জন, ২০১৮ সালে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ জন। ২০১৯ সালে এটি ছিল ছয় লাখ ২১ হাজার ১৩১ জন, যা ছিল এই পর্যন্ত সর্বোচ্চ। করোনাকালীন ২০২০ সালে এসে এই সংখ্যা কমে ১ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ জনে দাঁড়ায়। এরপর ২০২১ সালে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৬ জন, ২০২২ সালে দেড় লাখের বেশি বিদেশি দর্শক আসেন। ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত এই সংখ্যা দাড়ায় ২ লাখ ১৪ হাজারের বেশি। তবে, এই বছরের পর্যটন পরিসংখ্যান এখনো পর্যটন বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়নি।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ২০২২ সালের ‘ভ্রমণ ও পর্যটন উন্নয়ন সূচক’ অনুযায়ী, বাংলাদেশ বর্তমানে ১১৯টি দেশের মধ্যে ১০৯তম অবস্থানে রয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। এই তথ্য আমাদের পর্যটন শিল্পের অগ্রগতি ও দেশের পরবর্তীর জন্য একটি চ্যালেঞ্জের দিক নির্দেশ করে।