বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একেবারে স্পষ্ট করেছেন যে, একটি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয়। সম্প্রতি নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এই বিষয়টি তুলে ধরেন, যেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, অবশিষ্ট সময়ে অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি দানা বাঁধার মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা চলছে।
ফখরুল বলেন, দেশের সবচেয়ে পুরনো দল হিসেবে আওয়ামী লীগের চরিত্র নষ্ট হয়ে গেছে। তারা নিজেদের দ্বারা একটি ফ্যাসিস্ট দলে পরিণত হয়েছে এবং দেশের সাধারণ মানুষের ভালোবাসা ও আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। যারা গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত, নষ্ট করছে দেশের ইনস্টিটিউশন, তাদের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। তবে বিএনপি কোনও রাজনীতিক দলকে নিষিদ্ধের পক্ষে নয়, তাদের মনে করেন যে, এমন সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে যথাযথ বিচারের ভিত্তিতে হওয়া উচিত। তিনি স্পষ্ট করেছেন, যদি কোনও দল গণহত্যা, গণতন্ত্র বিপন্ন করার মতো অপরাধে জড়িত হয়, তবে অবশ্যই তার শাস্তি হওয়া দরকার।
নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আসন্ন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, যদিও আস্থা তৈরি করার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টাদের সহযোগিতা নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, এবং সবাই জানে যে, দেশের নির্বাচন অবশ্যই হবে। তবে বাংলাদেশে সব কিছু জটিলতায় ভরা, শত্রুরা অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়।
ফখরুল আরও জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক বিভাজন এই দেশটিকে নানা সমস্যার মুখে ফেলেছে। এর ফলে রাজনৈতিক দল, মিডিয়া এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব তৈরি হয়েছে। এখন দরকার সেই বিশ্বাস পুনরুদ্ধার, যার মাধ্যমে মানুষ নিজেদের ভবিষ্যৎ ও দলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবেন।
সরকারের বা বিরোধী দলের আভাসে তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ন্যাচার হিসেবে বার্গেইন করতে পারে, যা স্বাভাবিক। আলোচনার মাধ্যমে অনেক জটিলতা কাটিয়ে তোলা সম্ভব। ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যাপারে তিনি জানান, নিউইয়র্কে একটি ইভেন্টে দেখা হলেও তাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তিগত আলোচনা হয়নি। যেহেতু জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক ভালো নয় বলে কানাঘুষা চললেও, তিনি বলেন, সম্পর্কের অবনতি হয়নি, সবার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত সাক্ষাৎকার নিয়ে ফখরুল বলছেন, তিনি এমন কোনো কথা বলেননি যা সমস্যা তৈরি করবে। তিনি স্পষ্ট করেন, তিনি বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দল বা অন্য দলের দোষারোপে রাজি নন, বরং সবাইকে সত্যিই বিচার কার্যক্রমে সহায়তা করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার ব্যাপারে তিনি আরও জানান, সব আইনি ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি যখন তৈরি হবে, তখনই তিনি ফিরবেন। তখন তারা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, তারেক রহমান দেশের নেতা, জননেতা, এবং তার ফেরার জন্য তারা সব কিছু প্রস্তুত।