অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের পুনর্গঠনে প্রবাসীদের সহযোগিতা ও অবদানের মাধ্যমে সরাসরি অংশগ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতারা, যারা বিদেশে থাকা প্রবাসীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে এ ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
প্রবাসীদের বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, তাঁরা নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন, বিশেষ করে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া জুলাই অভ্যুত্থানের পর সেখানে পরিবর্তনের জন্য। তিনি জানাতে চান, সরকার সব সময় তাদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে নানা সংকল্প গ্রহণ করছে। এতে তারা নতুন উদ্যমে দেশের উন্নয়নের কাজে অংশ নিতে উৎসাহ পায়।
তিনি আরও বলেন, ভিডিও বা কথার মাধ্যমে কথা বলা সহজ হলেও, আমি চাই প্রবাসীরা মাঠে এসে সক্রিয়ভাবে আমাদের সঙ্গে যোগ দিন এবং একসঙ্গে কাজ করুন। আমি দেখেছি, রাজনৈতিক নেতারাও এই সফরে অংশগ্রহণ করে আমাদের আরও প্রেরণা জুগিয়েছেন। এতে করে আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি গত ১৫ মাসে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির জন্য প্রবাসীদের প্রশংসা করেন এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে সরকারের উদ্যোগের রূপরেখা তুলে ধরেন।
প্রবাসীদের অব্যাহত সমর্থন কামনা করে তিনি দেশের আগামী ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্প্রসারিত করে ভোটদানের বিষয়ে প্রবাসীদের সচেতন করে থাকেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফি সিদ্দিকী ‘ব্রিজিং বর্ডারস: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াসপোরা এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক একটি ইন্টারেক্টিভ প্যানেল আলোচনা পরিচালনা করেন। এতে অংশ নেন প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুলসহ আরও তিনজন প্যানেলিস্ট।
এছাড়াও, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।
পরবর্তীতে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ‘ভবিষ্যৎ গঠন: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনায় নেতৃত্ব দেন। এতে অংশ নেন যে প্যানেলিস্টরা, তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে নিজেদের ভাবনা ব্যক্ত করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে, ড. ইউনূস একটি নতুন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ‘শুভেচ্ছা’ চালু করেন, যেখানে প্রবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা, দিকনির্দেশনা ও বিনিয়োগের সুযোগের তথ্য সরবরাহ করা হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসীরা আরও সহজে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবেন।