কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী দৃঢ়ভাবে বলেছেন, যদি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার তাদের অবদান ও কাজের জন্য সত্যিকার অর্থে ক্ষমা প্রার্থনা না করা হয়, তবে বাংলাদেশের সরকার ক্ষমতায় যাওয়া কখনোই সম্ভব হবে না। তিনি এ কথা বলেন মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কেন্দ্রীয় মন্দিরে সাধারণ দর্শনার্থী ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান। তিনি মন্দিরে এসে কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্য শুনেন এবং পাশে বসে থাকেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘যদিও আমার সঙ্গে জামায়াতের লোকেরা এখন সেখানে আছে—এটা আমার জন্য কোনো সমস্যা নয়। আমার আর তাদের মধ্যে বিরোধ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের। তারা অন্যায় করেছিল। তবে আজকের তরুণ সমাজ বা নতুন প্রজন্ম সেই সময়ের অ আত্তরেকের অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত নয়। বাংলাদেশের জন্ম নেওয়া সব মানুষই আমার কাছে সমান, সে জামায়াতের সন্তান হোক বা আওয়ামী লীগের।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু একাত্তরে জামায়াতে ইসলামী যে জঘণ্য কাজগুলো করেছে, তার জন্য যদি তারা আন্তরিকভাবে ক্ষমা না চায়— যেমন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়—তাহলে তাদের পক্ষে কখনোই দেশের শাসনক্ষমতায় পৌঁছানো সম্ভব নয়।’
আত্মা ও দেশের মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে বলতে গিয়ে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘আমি পাকিস্তানের দখলদার সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। যদি পাকিস্তানিরা আমার দেশের বাড়িঘর পুড়ে না উড়াত, মা-বোনের সম্মান নষ্ট না করত, তবে মুক্তিযুদ্ধে জয় পাওয়া এত সহজ হতো না। কারণ পাকিস্তানি সেনাদের কাছে ছিল অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যাপক শক্তি। কিন্তু অস্ত্রই সব কিছু নয়; সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আল্লাহর ইচ্ছা।’
মানুষের সেবাকে জীবনের মূল লক্ষ্য বলে উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি জন্মেছি সেবক হিসেবে। মানুষের সেবাই আমার কাজ, সেখানে ধর্ম, বর্ণ বা দলের বিভাজন নেই। আমি আল্লাহ ও তার রাসুলের ওপর বিশ্বাস নিয়ে এই পথে চলছি, ভবিষ্যতেও করব।’
এ সময় জামায়াত নেতা অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মন্দিরে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং কুশল বিনিময় করেন। শেষে কাদের সিদ্দিকী নেতাকর্মীদের নিয়ে মন্দির ত্যাগ করেন।
— শেষ