খাগড়াছড়িতে তারমার্মা শিক্ষার্থীর শরীরী পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো প্রত্যক্ষ আলামত পাওয়া যায়নি। ওই কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা গেছে, পরীক্ষার পরীক্ষায় নির্ধারিত ১০টি সূচকেই সবসময় ‘স্বাভাবিক’ ফলাফল এসেছে। চিকিৎসক দলটি, যার নেতৃত্ব দেন খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. জয়া চাকমা, মীর মোশাররফ হোসেন ও নাহিদ আক্তার, বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে এ ফলাফল প্রকাশ করেন। ডা. জয়া চাকমা বলেন, সম্পন্ন মেডিকেল পরীক্ষায় কোনও ধর্ষণের আলামত দেখা যায়নি। অন্যদিকে, খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল নিশ্চিত করেছেন, মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পরীক্ষার প্রতিবেদন পেয়েছেন তারা, যেখানে ধর্ষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি মনে করেন, অপ্রয়োজনে ঘুরাফেরা ও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনায় সৃষ্টি হওয়া সহিংসতা পরিকল্পিত। তিনি বলেন, পরিকল্পিত সেই সহিংসতায় তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে, যা খুবই দুঃখজনক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে গত সাত দিন ধরে অবরোধ ও বন্ধুরা প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন, পাশাপাশি সেনা ও পুলিশবাহিনী পদক্ষেপ নেয়। রবিবার গুইমারায় সহিংসতায় তিন পাহাড়ি যুবকের মৃত্যু হয়, এর পাশাপাশি আহত হন তিন সেনা ও তিন পুলিশ সদস্যসহ মোট ১৩ জন। ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার সময় ওই কিশোরীর উপর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্বজনরা, পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শয়ন শীল নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। এই ঘটনায় ব্যাপক ভাবে ক্ষোভ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যা কখনো কখনো সহিংসতায় রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় এবং অতিরিক্ত সেনা বেশী মোতায়েন করা হয়। তবুও উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় গুইমারায় ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার গুইমারার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।