অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের বাইরে পাচার হওয়া অর্থের একটি অংশ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ফেরত আনার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তিনি এ ব্যাপারে কি পরিমাণ অর্থ ফেরত আসবে তা স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সাথে আলোচনাকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, টাকা যারা পাচার করে তারা এই ধরনের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় বুদ্ধি করে থাকেন। এটি সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগবে, তবে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। বিভিন্ন লিগ্যাল ফার্মের সাথে আলোচনা চলছে; আশা করা যায় ফেব্রুয়ারির মধ্যে কিছুটা অর্থ ফিরে আসতে পারে। বাকি টাকাগুলির জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এই ধরনের প্রক্রিয়া কোন সরকারের জন্য এড়ানো সম্ভব নয়। আমি বলেছি, টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বা সুইস ব্যাংকে পাঠাতে হবে। যদি তা না হয়, তবে আইনি পথে যেতে হবে, সেটাই আমাদের নিয়মিত প্রক্রিয়া।
অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ১১-১২টি পরিচ্ছন্নতার হাইপ্রোফাইল মামলা চলমান রয়েছে, যেখানে ২০০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকা ব্যক্তিরাও ধরা পড়েছেন।
নতুন সরকার কি ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই রাখবে। কারণ প্রক্রিয়া চালু থাকলে অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে। তারা যদি এই প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়, তবে অর্থ ফিরে আসবে না। তাই, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে এই প্রক্রিয়াগুলো অব্যাহত রাখতে হবে।
টাকা কতটা ফেরত আসতে পারে, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, এটি আমি বলতে পারছি না। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরই এ বিষয়ে উচিৎ মন্তব্য করতে।
অপরদিকে, পাচার হওয়া আরও অর্থের বিষয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, কিছু দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেবে। আমরা রিভিউ করছি কতটুকু অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু অর্থ বিদেশের কয়েকটি দেশে অস্থায়ীভাবে জমা রেখেছে। এই অর্থের অবস্থান, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও পাসপোর্টের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি কাজটি সম্পন্ন হলে বেশি সময় লাগবে না।
প্রশ্ন উঠেছে, উপদেষ্টা এলাকায় বেশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে বলে। এই বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বললেন, প্রজেক্টগুলো পূর্ব থেকেই পরিকল্পিত।
বিবিএস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ১০টি পরিবারের মধ্যে তিনটি পরিবার পুষ্টিহীনতা বা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে—এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বললেন, আমাদের কিছুটা পুষ্টিগত সমস্যা রয়েছে, বিশেষ করে শিশু এবং মায়েদের মধ্যে।
তিনি জানান, এই সমস্যা মোকাবেলায় আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। ভিজিএফ ও স্পেশাল ট্র্যাকের মাধ্যমে দরিদ্রদের জন্য খাদ্য সহায়তা চালানো হচ্ছে। জেলেদের জন্য মাছ ধরা কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে কিছুদিন। তাঁদের জন্য ২০ কেজি করে পোয়া চাল বিতরণ অব্যাহত থাকবে।
সবশেষে, তিনি বললেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করছি দেশের মানুষের দুঃখ দুর করতে।