সম্প্রতি গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নিজের ফেসবুক পেজে তিনি শেখ হাসিনাকে শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি পোস্ট করেন, যা দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে দেখা যায়। এই পোস্টের মাধ্যমে তৈরি হয় ব্যাপক বিতর্ক।
এরই মধ্যে গতকাল রবিবার ফেসবুকে কয়েকটি পাল্টাপাল্টি পোস্ট করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং সাকিব। আজ, সোমবার, নিজের ফেসবুক আইডিতে আরও একবার পোস্ট দিয়ে আসিফ মাহমুদ স্পষ্ট করে দেন সাকিবের বিষয়ে বিনয় and রাজনৈতিক অবস্থান।
তিনি লেখেন, ‘ভাইয়া, আমাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল। আমি শুধু নির্বাচনটি করেছিলাম, আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম না। আপনি কি তাকে চেনেন যিনি এই কথা বলেছিলেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘সাকিবকে নির্দেশ করে আমি বলছি, যার হাতে ছাত্র-জনতার রক্ত লেগেছে, তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়া উচিত নয়। অনেকবার বোর্ডের কর্মকর্তারা আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে বললেও, একথা অমান্য করে তারা খুনিদের সমর্থন করে। এছাড়া শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, মানি লন্ডারিং ও ফিনান্সিয়াল জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কেন শুধু ক্রিকেটের জন্য পুনর্বাসন করতে হবে? আইন সবার জন্য সমান, আইনকানুন মান্য করা উচিত।’
রবিবার রাতে, এইই পদের আরও এক পোস্টে আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, ‘একজনকে পুনর্বাসন না করায় আপনাদের আরও বিক্রম গালি দিয়েছেন, তবে আমি বলে দি, আমি সঠিক ছিলাম। এটাই শেষ কথা।’ তিনি কারো নাম উল্লেখ করেননি, তবে এই স্ট্যাটাস থেকে বোঝা যায়, তিনি সাকিবকেই আভাস করেছেন।
এর কিছুক্ষণ পরে, রাত ৯টার দিকে, সাকিব ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। ছবিতে দেখা যায়, তিনি গত বছর গণঅভ্যুত্থানের পর পলাতক থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করছিলেন। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন, আপা।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মন্তব্যে ধারণা পাওয়া যায়, আসিফ মাহমুদ তার এই পোস্টের মাধ্যমে সাকিবকে ইঙ্গিত করেছেন। আর সাকিব তা আবার স্পষ্ট করে দেন নিজের পোস্টে, যেখানে তিনি লেখেন, ‘শেষমেশ কেউ একাজ মান্য করে নিলেন যে, আমার জন্য আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া হলো না, আমি দেশের জন্য খেলতে পারিনি। হয়তো একদিন ফিরে আসবো দেশে, ভালোবাসা বাংলাদেশ।’
এই কারণে, বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, এই উপদেষ্টার পদে থাকা অবস্থায় কি কোনও খোলাসা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সাকিবের বিষয়ে বা ভবিষ্যতের জন্য কি পরিকল্পনা রয়েছে। সবাই দেখছেন, এই বিতর্ক কতটা দীর্ঘস্থায়ী ও কতটা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে।