প্রিয় ভাষাসংগ্রামী, গবেষক ও কবি আহমদ রফিক অবসর নিলেন না। তিনি শনিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যু খবর পরিবারের কাছ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে বুধবার বিকেলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, মৃত্যুর সাত মিনিট আগে তাঁর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। হাসপাতালের সূত্রে জানা গেছে, আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. কানিজ ফাতেমার তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শরীরে কিডনির সমস্যার পাশাপাশি সম্প্রতি বেশ কয়েকবার মাইল্ড স্ট্রোকের শিকার হয়েছিলেন তিনি।
১১ সেপ্টেম্বর তিনি ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় গত রোববার তাঁকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আহমদ রফিক একাই বাস করতেন ঢাকার নিউ ইস্কাটনের গাউসনগর এলাকায়। তিনি ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৬ সালে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তাঁর কোনও সন্তান নেই।
বাহুবহুল সাহিত্যকর্ম ও ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখতে থাকায় তিনি একজন স্বনামধন্য সমালোচক, ইতিহাসবিদ ও প্রাবন্ধিক। শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেন। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ পুরষ্কারদের মধ্যে রয়েছে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও নানা সম্মাননা। দুই বাংলার রবীন্দ্রচর্চায় তাঁর অবদান অনন্য ও স্বীকৃত, কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে তিনি ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি পান।
২০১৯ সাল থেকে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে শুরু করে। অস্ত্রোপচারের পরও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ২০২৩ সাল থেকে তিনি দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন। পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে অবনতি ঘটে।
শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে এই সূচনায় আমরা তাঁর জীবন ও কর্মের স্মৃতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।