গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে এবং চলমান বর্ষণের কারণে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দ্বীপের দুই শতাধিক বাড়িঘর হাঁটু পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে, যার ফলে শতশত পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়ে গেছে। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে প্রধান পানি নিষ্কাশনের একমাত্র স্লুইস গেট বন্ধ থাকার কারণে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে অবিরাম ভারী বর্ষণের কারণে দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় জমে গেছে অতিরিক্ত পানি। তার উপর জোয়ারের তীব্রতা বাড়ায় পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, পাঁচটি গ্রামের অসংখ্য ঘর পানিতে ডুবে গেছে, এমনকি জোয়ারের ঢেউয়ে এক মাছ ধরা ট্রলারও ডুবে গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, জলাবদ্ধতার মূল কারণ হলো ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একমাত্র পানির স্লুইস গেটটি দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায়। মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম জানিয়েছেন, ‘সকাল থেকেই পানির মধ্যে আটকা পড়ে আছি। রান্না করার সুযোগ পেলাম না, ফলে পরিবারে খাবারও সংগ্রহ করতে পারছি না।’
অপরদিকে, রাইসুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ইউপি’র একজন সহ-সভাপতি দীর্ঘদিন ধরে পুরনো গেটটি বন্ধ রেখেছেন, যার কারণে বর্ষার পানি জমে গেছে এবং ঘরবাড়ি খালি থাকছে। তিনি আরও জানান, গেটটি খোলার জন্য তিনি এবং অন্যরা উদ্যোগ নিচ্ছেন।
এদিকে ইউপি সদস্য আল নোমান জানান, অন্তত ১৫০টি ঘরবাড়ি পানির নিচে ডুবে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে গেটের মেরামতের দাবি জানানো হলেও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য দ্রুত গেট খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বৃষ্টি থামলেই পানি কমে যাবে। এদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে, আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে গঠিত গভীর নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে উপকূলের কাছাকাছি মাছধরা ট্রলারগুলোর সতর্কতামূলক চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।