ভোর থেকেই ঢাকায় চলছে অবিরাম বর্ষণ, মঙ্গলবারও সারাদিন বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টির কবলে পড়ে বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে জল জমেছে, ফলে যানজট ও চলাচলে অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতেও, যেখানে সবজির সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় দামে সরাসরি প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে সবজি চাষে ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ার কারণে শাক-সবজির দাম বেড়ে গেছে ব্যাপকভাবে।
বাজারে দাম বৃদ্ধির বিষয়টি ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় তাঁরা উচ্চ মূল্যে সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে, ক্রেতাদের অভিযোগ, যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বর্ষা দেখা দিলেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম একযোগে বৃদ্ধি পায়, যা তাদের পকেটের ক্ষতি করে।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কেজি প্রতি পটল, ঢ্যাঁড়শ ও ঝিঙ্গার দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। অন্য সবজিগুলোর মধ্যে করলা, বেগুন, বরবটি, চিচিঙার দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। জালি কুমড়া ও লাউ বিক্রি হচ্ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
আজ, বুধবার ১ অক্টোবর, বৃষ্টির কারণে বাজারে কিছুটা দাম বেড়েছে। বর্তমানে কেজি প্রতি বরবটির দাম ৮০ টাকা, উস্তার দাম ১০০ টাকা, ধন্দুল-ঝিঙার ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কচুর লতির বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা। কচুরমুখি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা কেজি দরে। ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৫০ টাকা ও লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আলু আগের দামে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ রেললাইন সংলগ্ন বাজারের বিক্রেতা আশরাফ আলী বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দামে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি কমলে দাম আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। অন্যদিকে, মগবাজারের বনলতা মার্কেটের ক্রেতা উম্মে হাবিবা অভিযোগ করেন, যে কোনো দুর্যোগ বা বৃষ্টির নামে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বান্ডার করা হচ্ছে। গতকাল বিকেলের বৃষ্টির আগেই পাইকারি বাজারে মালামাল পৌঁছে গিয়েছিল প্রবল। এর মধ্যেই দাম বাড়ানোর কোন কারণ ছিল না।
আবার, মধুবাগ বাজারের খুচরা বিক্রেতা শামীম জানান, এ সময়ে বিক্রি হওয়া মরিচগুলো হলো ভারত থেকে আনা আমদানিকৃত মরিচ। বর্তমানে দুর্গাপূজার সময়, এ কারণে মূলত এলসি মুক্ত মরিচের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে প্রতি বছরই এই সময় দাম বাড়ে।
দ্রুত সময়ে, সাধারণ ক্রেতাদের জন্য সমস্যার কারণ হচ্ছে আবহাওয়া ও আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতির পরিবর্তন, যা সবজির দাম বৃদ্ধির জন্য প্ৰধান কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বলছেন ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতি জনজীবনে প্রভাব ফেলছে এবং সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।