জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে একত্র না হয়, তাহলে কমিশন বিভিন্ন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা উপস্থাপন করবে। রবিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এক বৈঠকের সূচনাতে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ছয়টি প্রস্তাব দিয়েছিল। আমরা বলেছি, এসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে একত্রিত হয়ে একক একটি রায় বা সিদ্ধান্তে আসা উচিত। যদি ৩০টি রাজনৈতিক দল একজোট হয়ে একটি প্রস্তাব দেন, তাহলে আমরা তা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে উপস্থাপন করবো। অবশ্যম্ভাবী মনে করি, একক প্রস্তাবের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াটিকে অতি দ্রুত বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বরের আলোচনায় উত্থাপিত বিষয়গুলো আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছে তুলে ধরেছি। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু সুপারিশ ও ব্যাখ্যা প্রণয়ন করা হয়েছে। যদি সব পক্ষ একমত হন, তাহলে এই প্রক্রিয়াটি আরও সহজ ও দ্রুত হতে পারে। সকালে কমিশন প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তারা তাড়াহুড়ো করে দ্রুত কাজ সম্পন্নের ওপর জোর দিয়েছেন।
আলী রীয়াজ বলেছিলেন, সনদে সম্মতি দেয়ার প্রক্রিয়া সর্বসম্মত এবং স্বাক্ষরিত রাজনৈতিক দলিল রূপে রূপান্তর করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য, যদি আরও স্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকে, তবে সেটি আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে উপস্থাপন করে কর্মপ্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে। এই কাজ ১৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করা আমাদের লক্ষ্য।
তাছাড়া, নির্বাচনের প্রস্তুতি কিংবা বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিভ্রান্তি এড়াতে আমরা সচেষ্ট। গুরুত্বপূর্ণ মেয়াদ ১৫ অক্টোবর পূর্ণ হবে, তাই তার আগেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাই।
আলী রীয়াজ আশা প্রকাশ করেছেন, দলগতভাবে যদি স্পষ্ট প্রস্তাব রাখা যায়, তাহলে সেই সব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। যদি প্রয়োজন হয়, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবারও বসেও পর্যালোচনা করা হবে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশিদের অবদান, কর্মীদের রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে আমরা একটি দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্র গড়ে তুলতে এসেছি। নাগরিক অধিকার ও স্বজনপ্রীতি রুখে দিয়ে, স্বচ্ছ ও জবাবদিহি যুক্ত জাতি গড়ার দায়িত্ব এই দলগুলোর ওপর। এটা কেবলমাত্র স্বাক্ষর নেওয়ার কাজ নয়, এটি আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা, রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার এগিয়ে নেওয়া।
আমরা সবাই মিলে সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। দেশের নাগরিকের অধিকারের প্রশ্নই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—তাদেরই সম্মান ও স্বার্থ এখানে কেন্দ্রীভূত। মুক্তি ও নিরাপদ ভবিষ্যতের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সব দল একসঙ্গে কাজ করবে—এই প্রত্যাশায় আমরা আছি।