আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স অসাধারণ। ইতিমধ্যে দুইটি ম্যাচ জিতে সিরিজের আত্মবিশ্বাস উচুঁ করে তুলেছে তারা, এবং এখন তাদের লক্ষ্য সম্পূর্ণ সিরিজ জেতা অর্থাৎ হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন। প্রধান কোচ ফিল সিমন্স স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বাংলাদেশের যে এই লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামছে, তা তারা বোঝাতে পারছেন তিনি নিজেও। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দলের পারফরম্যান্সে তিনি সন্তুষ্ট, মন্তব্য করলেন—বাংলাদেশ এখন খেলছে ‘উত্তেজনাপূর্ণ ও আক্রমণাত্মক’ ক্রিকেট, যা তাদের আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আজ রাত সাড়ে আড়াইটায় শারজায় অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, যেখানে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। সিরিজের প্রথম ম্যাচে রশিদ খানের ঘূর্ণিতে বেশ কয়েকটি ভুলের কারণে বাংলাদেশ হেরেছিল মাত্র ৯ রানে, তবে শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহান ও রিশাদ হোসেনের জুটিতে জয়ের আনন্দ উপভোগ করে। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে একটু ব্যর্থ হলেও, পাওয়ার প্লের মধ্যেই তিন উইকেট হারানোর পর দলের মিডল অর্ডার আবার জেগে ওঠে। সোহানের অপরাজিত ৩১ রানে তিনি দলকে সহজ জয় এনে দেন, এবং এভাবেই সিরিজ নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ।
কোচ সিমন্স বলেছেন, ‘এই দল এখন বুঝে গেছে কিভাবে চাপের মুখে ম্যাচ জেতা যায়। কাছাকাছি থাকা ম্যাচ জিতলে আত্মবিশ্বাস দরকারি স্তর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। প্রথম ম্যাচের ওপেনাররা দারুণ শুরু করেছে, দ্বিতীয় ম্যাচে মিডল অর্ডার দায়িত্ব দিয়ে দিচ্ছে। আমরা যেন মাঠে খেলছি উত্তেজনাপূর্ণ ও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট, সেটাই লক্ষ্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘সোহানের ইনিংসটি ছিল অসাধারণ। জাকের ও শামীম শুরুটা ভালো করেছে, আর সোহান শেষের দৃঢ়তায় দলকে জয় এনে দিয়েছে। ব্যাটারদের বলেছি যেন সুযোগ পেলে তারা দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারে, সেটাই মাঠে দেখছি।’
পরিচালনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাকের আলী অনিক, যিনি লিটন কুমার দাসের অনুপস্থিতিতে দলে দায়িত্ব নিয়ে বেশ ভালো পারফরম্যান্স করছেন। গত চার ইনিংসের মধ্যে তিনি প্রথমবারের মতো দ্বেষে পৌঁছেছেন, ২৫ বলে ৩২ রান করে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কোচ সিমন্স বলেছেন, ‘বিশ্বজুড়ে ব্যাটারদের খারাপ সময় আসে, কয়েকটি খারাপ ম্যাচ মানে গোলমাল নয়—এটা ক্রিকেটের অংশ।’
বল হাতের দিকেও বাংলাদেশ উন্নতি লাভ করছে। শরীফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। দ্বিতীয় ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে তারা কেবল ৩৫ রান খরচ করেছেন, আর শেষ পাঁচ ওভারে কেবল ৪০ রান দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের রান সীমিত করেছেন। এই ধারা বাংলাদেশের বোলিং ইউনিটের উন্নতিরই প্রমাণ। কোচ সিমন্স বলছেন, ‘আমাদের বলের দল এখন এমন অবস্থানে পৌঁছেছে যেখানে যে কোনও কম্বিনেশনের উপর নির্ভর করে কাজ করা যায়। চলতি সপ্তাহগুলোতে আমাদের বোলিংয়ে ধারাবাহিক উন্নতি হয়েছে, এবং তার ফল এখন দেখা যাচ্ছে।’ এখন সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচের লক্ষ্য একটাই—অবশ্যই হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করা। সিমন্স জানিয়েছেন, ‘আমরা এখনও সন্তুষ্ট নই। এই ধারাটা ধরে রাখতে হবে এবং সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিততে হবে।’
অন্যদিকে, এই সিরিজে দলে থাকলেও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেতে পারেননি সৌম্য সরকার, ফলে তিনি দেশ থেকেই সতীর্থদের খেলার উচ্ছ্বাস উপভোগ করছেন। আজকের ম্যাচের পরে, দুই দল ৫০ ওভারের লম্বা লড়াইয়ে নামবে। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায়।