আজ সোমবার, ৬ অক্টোবর, বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মহান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা এবং কঠিন চীবর দানের জন্য উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে প্রস্তুতি নিয়েছে। এই পুণ্যতিথিকে ‘আশ্বিনী পূর্ণিমা’ নামেও ডাকা হয়। বৌদ্ধ ধর্ম বিশ্বাসের মতে, এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মহামানব গৌতম বুদ্ধের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের স্মরণে উদ্যাপন করা হয়। তাঁরা মনে করেন, এই তিথিতে বুদ্ধের মহাপরিভ্রমণের মাধ্যমে মানবজাতির শান্তি, সুখ এবং কল্যাণের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটে। ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, বুদ্ধ এর পর ভারতের সাংকাশ্য নগরে অবতরণ করেন, যেখানে তিনি মানুষের জ্ঞানের দীপ্তি জাগিয়ে তোলেন। এই পাঁচমাসের বর্ষাবাসের সমাপ্তি হিসেবে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা প্রবারণা পূর্ণিমা উপবাস ও উৎসবের মাধ্যমে সাম্য, ধৈর্য্য এবং মঙ্গলের মূল মন্ত্র পালন করে থাকেন। সোমবার রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে এই পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে এবং আগামীকাল মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩ মিনিটে তার সমাপ্তি হবে। প্রতিবারের মতো এবারো আষাঢ় মাসের পর থেকে এক মাস ধরে দেশের সব বৌদ্ধ বিহারে গুরুত্বপূর্ণ চীবর দান অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফেডারেশন রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় নানা বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষুদের প্রাতঃভোজন, বৈচিত্র্যময় বুদ্ধপূজা, পঞ্চশীল ও অষ্টাঙ্গ উপসনা গ্রহণ, মহাসংসদান, আলোচনাসভা, প্রদীপ পূজা, আলোকসজ্জা এবং বিশ্ব শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা। এই শুভোদিন উপলক্ষে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দেন এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তাঁরা বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনের আমন্ত্রণও জানান। এদিকে, এই পুণ্য তিথির গুরুত্ব উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানেও ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধরা নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উৎসব পালন করছেন। ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এই মহামঙ্গলময় দিবসের শুভেচ্ছা ও প্রীতি প্রকাশ করেছেন।