আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) আইন নতুন করে সংশোধন করে এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারার সংযোজন করা হয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নির্বাচনের জন্য প্রার্থিতা এবং সরকারি পদে থাকতে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে।
সম্প্রতি সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১৯৭৩ সালে আইন সংশোধন করে একটি নতুন ধারা, অর্থাৎ ২০ সি যোগ করা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইসিটি ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়, তবে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত বা তার পদে থাকতে পারবেন না। এছাড়াও, তিনি স্থানীয় সরকার, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত বা থাকলেও তার অযোগ্যতা জারি থাকবে। প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় বা সরকারী পদেও তাঁরা যোগ্য হবেন না। তবে, যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালের রায়ে খালাস পান, তবে এই অযোগ্যতা অদলবদল হবে না।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে অভিযুক্ত কেউ যদি বিচারাধীন থাকাকালীন কোনও সরকারি দায়িত্বে থাকতে চান, তবে সেটা সম্ভব নয় এই সংশোধনীর মাধ্যমে। এই আইন পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হলো বিচারাধীন ব্যক্তিদের সরকারি বা সংসদীয় ক্ষমতা গ্রহণ থেকে বিরত রাখা।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক বিচার এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিল। এরপর থেকে অনেকের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম ও অন্যান্য মানসিক চাপের মামলা চলছে। শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীরা ২০১৫০ এর গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান; তখন থেকে তিনি বিদেশে রয়েছেন বা আত্মগোপনে।
এখন নতুন এই আইন সংশোধনীতে, অভিযুক্তরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেয়ে বেশি, সরকারি পদে থাকতে বা বিভিন্ন সরকারি দায়িত্বে থাকতেও অযোগ্য হয়ে যাবেন। এটি মূলত তাদের ক্ষমতা কমানোর প্রবণতা এবং বিচারের আওতায় আনোয়নের উদ্দেশ্যকে শক্তিশালী করে।