শেষ বয়সে মোতালেব আকনের সঙ্গে দেখা করতে চান বলে রিপোর্ট করে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে। এই প্রতিবেদনটি লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নজরে আসে। পরে তিনি ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের মাধ্যমে দলের সাবেক ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা মোতালেব আকনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরই ফলস্বরূপ, প্রথমে ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাদের সাক্ষাতের প্রস্তুতি শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী উল্লেখ করেন, এই সুবিধাজনক যোগাযোগের মাধ্যমে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা শৈল্পিক ও মানবিক বন্ধনের নিদর্শন দেখিয়েছেন।
শনিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন দলের সামনের সারির নেতারা। উষ্ণ শুভেচ্ছা ও আবেগপূর্ণ কথাবার্তার মাধ্যমে এই আলোচনাক্রম শুরু হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী, সংগঠনটির আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, দৈনিক কালের কণ্ঠের যুগ্ম সম্পাদক ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পরিচালক হাফিজ আল আসাদ সাঈদ খানসহ স্থানীয় ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী মোতালেবের বাড়িতে হাজির হয়ে তার হাতে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন এবং বললেন, এই উদ্যোগ কেবল একজন প্রবীণ নেতার স্বপ্নপূরণ নয়, বরং তা বিএনপি’র তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রেম ও শ্রদ্ধার প্রতিফলন। তিনি উল্লেখ করেন, তারেক রহমান হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন হিসেবে শুধুই একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি মানবিক, সংবেদনশীল ও স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন একজন নেতা।
সাক্ষাৎ উপলক্ষে স্থানীয় মহলে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ ও প্রয়াত নেতাদের পরিবারের সদস্যরা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা এই সাক্ষাৎকে দলের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে অভিহিত করেন। তারা বলেন, এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং দলের মধ্যে আন্তরিকতা, ঐক্য ও মানবিক বন্ধন দৃঢ়তর করবে।
অনুষ্ঠানে মোতালেব হোসেন উপস্থিত হয়ে তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এক আবেগঘন আলোচনায় জানান, তিনি তার রাজনৈতিক জীবনে অনেক চড়াই-উৎরাই দেখেছেন। তারেক রহমানের প্রশ্নে তিনি সারা দেশবাসীর জন্য সৎ কর্মের উৎসাহ দিয়ে বলেন, সবাই যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করে। তিনি বক্তব্যে আরও বলেন, মোতালেবের কাছ থেকে আমি ও আমার দলের নেতাকর্মীরা যোগ্য উপদেশ পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা চালাচ্ছি।
তারেক রহমান বলেন, মোতালেবের জীবন ও সংগ্রাম আমাদের জন্য শিক্ষা এবং অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণই আমাদের মূল শক্তি। ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে যে, জনগণ বিএনপির পক্ষে বারবার রায় দিয়েছে। এই বিশ্বাস আমাদের দলের ভিত্তি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিকে নজর রেখে, আগামী দিনে তরুণদের জন্য উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা, কৃষি ও স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গও উঠে আসে। মোতালেবের পরিবারের সুস্থ ভবিষ্যৎ ও স্বাবলম্বীতার জন্যও নানা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, ভবিষ্যতে সকল দল ও মতের মধ্যে শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য এই সম্পর্ক অনুপ্রেরণা হবে। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং নেতা-কর্মীরা জনসেবায় আরও মনোযোগী হবেন।
শেষে, পিরোজপুর জেলা বিএনপির নেতারা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, প্রবীণ নেতাদের সম্মান ও তাদের অভিজ্ঞতা সংরক্ষণের ধারাকে ভবিষ্যতেও চালিয়ে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার (৫ অক্টোবর) ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোছাছেদুল মোমিন মিথুন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।