ভারতের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি সম্প্রতি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ভবনে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যাতে দ্রুত বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য অনুভূতি প্রকাশ ও হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই বকেয়া পরিমাণ বর্তমানে ৪৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৫ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা), যা বাংলাদেশের কাছে আদানি গ্রুপের সবচেয়ে বড় দেনাগুলির একটিতে পরিণত হয়েছে। আদানির এই চিঠিতে বলা হয়েছে, জুন মাসে এককালীন ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের পরবর্তীতে আবারও নতুন করে অর্থের জন্য দরকার পড়তে শুরু করেছে। আদানির সাথে বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী, তারা গود্ডা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে, যার জন্য প্রতি মাসে কিছু অংশ অর্থ পরিশোধ করা হয়। তবে, বকেয়া পরিমাণের এই বিরাট পরিমাণ নিয়ে ঋণদাতা ও অংশীদারদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো এই চিঠিতে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৩ জুন পিডিবির সাথে বৈঠকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, এখনো পর্যন্ত বাস্তবায়ন নিয়ে দৃশ্যমান কোনও চূড়ান্ত পরিকল্পনা প্রকাশ হয়নি। আদানির পক্ষের মতে, এই বড় পরিমাণ বকেয়া দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তাদের আন্তরিক হস্তক্ষেপের প্রয়োজন। পাশাপাশি, আদানির সাথে বাংলাদেশের কয়লার মূল্য নিয়ে বিরোধও চলছে, বিশেষ করে ঝাড়খণ্ডের পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লার মূল্য নির্ধারণে। আদানি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সহমত পায়নি। ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনুযায়ী, যদি শুল্ক পর্যায়ক্রমে পর্যালোচনা হয় এবং বিরোধ নিষ্পত্তি হয়, তাহলে আদানি পাওয়ার কোম্পানিকে শীতকালীন সময়ে ভারতের বাজারে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দ্রুত এই অর্থপ্রদানের ব্যবস্থা নিয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। তারা আরও জানাচ্ছেন, অমীমাংসিত এই বকেয়া ও কয়লা বিষয়সহ সব বিরোধ মেটাতে শিগগিরই উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় বসার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির জন্য এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্য রয়েছে।