দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানকে নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক ও উত্তেজনা। পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে রাজ্য সরকারের আয়োজিত দুর্গা পূজা কার্নিভালে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির তরফ থেকে তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের সূচনা ঘটে। রোববার (৫ অক্টোবর) এই ঘটনা ঘটে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমবর্ধমান জেলার দুর্গাপুরে। তবে জয়া আহসান বিক্ষোভের মুখোমুখি হতে হয়নি; তিনি দুর্গাপুর থেকে চলে যাওয়ার পরপরই বিজেপি কর্মীরা সেখানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেন।
এ বছরের দুর্গাপুরের দুর্গা পূজা কার্নিভাল ছিল অত্যন্ত জোরেশোরে। চার বছর ধরে এটি চতুর্থবার উদযাপিত হচ্ছে। মূল আকর্ষণ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এপার ও ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। তিনি দর্শকদের উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রসঙ্গীতের গান পরিবেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন কথাও বলেন, যা সকলের মধ্যে সাড়া ফেলেছিল। তবে মঞ্চে শেষ হতেই এই উৎসবের ওপর বিতর্কের আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
বিজেপির অভিযোগ, বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে দুর্গাপুরের এই পূজার কার্নিভালে আমন্ত্রণ জানানো একপ্রকার বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে অবজ্ঞা। বিজেপির দাবি, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মূলত বাংলার নিজস্ব শিল্পীদের উপেক্ষা করে বাইরে থেকে তারকাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যা বাংলার শিল্প ও সংস্কৃতি পরিচালকদের অসম্মান।
প্রতিবাদে সেই দিন বিজেপির কর্মীরা ‘বাংলার গর্ব, বাংলার মঞ্চে বিদেশি কেন?’ এই স্লোগান দিয়ে মঞ্চে পৌঁছায়। তারা জয়া আহসানের ছবি রঙিন করে কালি মাখিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ করেন। দুর্গাপুরের মহকুমা শাসকের পদত্যাগের দাবিও তোলেন তারা।
প্রতিবাদ কর্মসূচি চলে মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের দপ্তরের সামনে এবং এসডিও বাংলোর সামনে। নেতৃত্ব দেন বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে, এই প্রতিবাদকে কটাক্ষ করে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। জেলা তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যর উন্নতিতে বিজেপি বারবার ঘানো দিতে চাইছে। তিনি বলেন, ‘‘শিল্পীর কোনও জাত বা ধর্ম হয় না। দুর্গাপুরের মতো শহরে জয়া আহসানের মতো শিল্পীর আগমন একটি সংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রতীক। এর মাধ্যমে রাজনীতি ঢোকানো ঠিক নয়।’’ এদিনের এই বিতর্কের পর বাংলার সংস্কৃতি রক্ষায় সকলের ঐক্যবদ্ধ শ مسئولতা আরও দৃঢ় হয়েছে।