পরিবেশ মানবাধিকার রক্ষকদের সুরক্ষা নিশ্চিত ও তাদের নিরাপত্তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য জরুরি ভার দেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে পরিবেশ মানবাধিকার রক্ষাকারীরা হত্যা ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন, যা জাতিসংঘও গভীর গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জাতীয় আইনে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করে এ বিষয়টির অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে। মানবাধিকার রক্ষায় বিচার বিভাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা আরও সক্রিয় ও কার্যকর হওয়া উচিত।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ (খসড়া)’ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শ সভায় এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আদালত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে, তবে তার বাস্তবায়নে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। তবে সামগ্রিক বিচারে এই খসড়া অধ্যাদেশটি বেশ ভালো। এতে তদন্ত, সুপারিশ, ক্ষতিপূরণ, প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, সালিশ ও মধ্যস্থতার মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদানসমূহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই কমিশনকে কার্যকর, শক্তিশালী ও দক্ষ করে তোলা।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, কমিশনের সুপারিশ কেবল নৈতিক শক্তি নয়, তাই মান্যতা ও আইনি প্রভাব নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে সালিশ বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নের জন্য আইনি কাঠামো থাকা অপরিহার্য।
তিনি উল্লেখ করেন, খসড়ায় কিছু জায়গায় সংশোধনের সুযোগ রয়েছে, যেমন ‘ব্যক্তি’ শব্দের সংজ্ঞায় সরকারি সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্তর্ভুক্ত করা, কমিশনের নিজস্ব আইনজীবী প্যানেল গঠন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
এছাড়া, এই প্রস্তাবিত আইনটি পুলিশের কমিশন, নারী কমিশন, গুম ও নিখোঁজ তদন্ত কমিশন এবং গণমাধ্যম কমিশনের মতো অন্যান্য আইনের সঙ্গে পরস্পর সংহত ও সঙ্গতিপূর্ণ হবে। তাই এখন থেকেই এই আইনের পারস্পরিক সম্পর্ক ও সামঞ্জস্য নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো সিগফ্রিড রেনগলি, ডেনমার্ক দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন আন্ডার্স বি. কার্সলেন, ইউএনডিপি বাংলাদেশের প্রতিনিধি স্টেফান লিলার ও রোমানা শভাইগার, এবং আইনের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী। এতে আইন মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকার কর্মী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
আজকের খবর/বিএস