পাকিস্তানে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের সময় গত সোমবার (১৩ অক্টোরেক) এক ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে, যেখানে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা, তিন বিক্ষোভকারী এবং এক পথচারী রয়েছেন। আহত হয়েছেন একাধিক ব্যক্তি, সংঘর্ষের এলাকায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনাটি ঘটে পাঞ্জাবের মুরিদক শহরে, যখন হাজারো বিক্ষোভকারী শান্তিপূর্ণভাবে ইসরায়েলবিরোধী প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছিলেন। পুলিশ তখন বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার করে। কিন্তু ওই সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে, যার জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলির নেয়। বেশ কয়েকটি যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষের দীর্ঘ সময়ে এই রক্তাক্ত ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
প্রথমদিকে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় ব্যাপক সমর্থন নিয়ে—১৯ অক্টোবরের আগে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন, ঠিক তখনই তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) দেশটিতে বিক্ষোভের ডাক দেয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় এই গোষ্ঠীর বিক্ষোভে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, লাহোর থেকে শুরু হয়ে ইসলামাবাদে পৌঁছানো এই মিছিলটি ছিল বিশাল, যা দেশের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশির এই বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয় তখনই, যখন বিক্ষোভকারীরা তাদের বিরুদ্ধে গুলি চালায় ও আড়াআড়ি আগুন লাগায়। এই পরিস্থিতির মধ্যে টিএলপি নেতা সাদ রিজভিও গুলিবিদ্ধ হন, শরীরের তিন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, এই সংঘর্ষে অনেক বিক্ষোভকারী ও পুলিশ আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। রাজধানীর প্রবেশ ও প্রস্থানপথগুলো সোমবার আংশিকভাবে খোলা হলেও, সাধারণ জীবনপ্রবাহের উপর প্রভাব পড়ে যায়।
সংঘর্ষের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে টিএলপি বলেছে, পুলিশের গুলিতে তাদের বেশ কিছু সমর্থক নিহত ও আহত হয়েছেন। তারা আরও জানিয়েছে, সংগঠনের নেতা সাদ রিজভির শরীরের তিন স্থানে আঘাত লেগেছে। এই ঘটনাগুলোর কারণে দেশের উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়, যার ফলশ্রুতিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।