বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা এবং উৎসব ভাতার জন্য প্রজ্ঞাপন জারির দাবি নিয়ে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এই আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন। তবে পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং হাইকোর্টের ফটকে শিক্ষকদের আটকে রাখে।
শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন, তারা তাঁদের কর্মবিরতিসহ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত জারি না হয় বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির ২০ শতাংশ, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন। এই দাবিগুলি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কোন ধরনের শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেবেন না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন, তারা শিক্ষা উপদেষ্টার আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে তারা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর অনুরোধে কিছু সময় জন্য প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থগিত করেন। তারা বিকাল ৪টার সময় সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন।
এর আগে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’ এর সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেছেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টার আলোচনার প্রস্তাব আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি, আমাদের একটাই দাবি—প্রজ্ঞাপন জারি হোক। আর কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই।’
গত ১২ অক্টোবর দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ শিক্ষকদের সরানোর চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেডের ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
রবিবার ও সোমবার রাতভর শিক্ষকেরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করেন। কেউ প্লাস্টিকের চট বিছিয়ে, কেউ ব্যানার মাথার নিচে দিয়ে রাত কাটান। তাঁদের দাবি, প্রজ্ঞাপন না आने পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে কর্মবিরতি ও আন্দোলন।
অন্যদিকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এখনও কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও ক্লাসে প্রবেশ করছেন না, পাঠদান কার্যক্রমেও অংশ নিচ্ছেন না। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায়, শিক্ষক লাউঞ্জ বা অফিস কক্ষে বসে তারা তাঁদের অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া, নানা স্থানে শিক্ষকরা ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ফেসবুকে ঢাকা শহরে অবস্থানরত শিক্ষকদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে অনেক জেলা ও উপজেলা থেকে পোস্ট আসছে। এই আন্দোলন অব্যাহত রাখতে শিক্ষকদের মানসিক দৃঢ়তা ও ঐক্য বজায় রয়েছে।
আজকের খবর / ওআর