দেশে চলতি অক্টোবরের প্রথম ১২ দিনে প্রবাসীরা বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে পাঠিয়েছেন মোট ১১৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। এই সময়ে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে প্রবাসী পাঠানো ৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এ তথ্য সোমবার (১৩ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে।
বিশেষ করে ১২ অক্টোবর একদিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ হয়েছিল ১৯৪ মিলিয়ন ডলার, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একদিনের রেমিট্যান্স প্রবাহ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এটি দেশের অর্থনীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বাইরে থাকা অর্থের স্থিতিশীলতা 보여ছে।
চলতি অর্থবছর (২০২৫-২৬) এর শুরুর দিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশ উচ্ছ্বাসের মুখোমুখি। জুলাই থেকে অক্টোবরের প্রথম ১২ দিন পর্যন্ত দেশের বাইরে থেকে এসেছে মোট ৮৭৮৭ মিলিয়ন ডলার। এর আগে একই সময়ে ছিল ৭৫৩৬ মিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন যে, হুন্ডি বা অনানুষ্ঠানিক চ্যানেল বন্ধ করার উদ্যোগ, প্রবাসীদের জন্য প্রণোদনা বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থা সহজ করে তোলার ফলে এই ইতিবাচক গতি দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, আসন্ন উৎসব মৌসুম ও মধ্যপ্রাচ্যে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হওয়ার কারণে রেমিট্যান্সের এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, প্রণোদনা নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং অর্থনীতির অন্যান্য মূল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এই প্রবৃদ্ধিকে দীর্ঘস্থায়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তবে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের মোট আর্থিক পরিমাণ আবারও ২ হাজার কোটি ডলার (২০ বিলিয়ন) ছাড়াতে পারে।
অতিরিক্ত হিসেবে, গত সেপ্টেম্বরে দেশে এসেছে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার, আর আগস্ট ও জুলাইয়ে যথাক্রমে ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার এবং ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠানো হয়েছিল।
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছর জুড়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন মোট ৩৩১২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড। এই ধারা দেখে বোঝা যায়, দেশের অর্থনীতি আবার শক্তিশালী হয়ে উঠছে এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।