বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবেররা কেবল নিজেদের অর্থ Roth করছেন না, বরং মানবতার কল্যাণে নিজেদের সম্পদ ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছেন। তারা দারিদ্র্য, রোগ দূরীকরণ, শিক্ষা উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও মানবাধিকার রক্ষা সহ বিভিন্ন চ্যারিটেব কাজের জন্য বিশাল অঙ্কের অনুদান দেবছেন। ইতি মধ্যে বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ‘ফোর্বস’ তাদের দানশীলতার তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায় ওয়ারেন বাফেট, বিল গেটস, জর্জ সরোস, মাইকেল ব্লুমবার্গসহ আরও অনেক ধনী তাদের সম্পদের বড় অংশ মানবকল্যাণে দান করছেন।
ওয়ারেন বাফেট, যিনি বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের প্রধান নির্বাহী, বিশ্বের অন্যতম উদার দাতা হিসেবে পরিচিত। তার নিট সম্পদ এখন ১৪ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার, যার মধ্যে প্রায় ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার দান করেছেন— এটি তার মোট সম্পদের প্রায় ৩০ শতাংশ। তিনি মূলত স্বাস্থ্যসেবা, দারিদ্র্য বিমোচন ও শিক্ষা ক্ষেত্রে দান করেন, যা তিনি বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনসহ নিজের পরিবারের নানা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালনা করেন।
পরবর্তী নাম হল বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস, যাদের প্রতিষ্ঠিত গেটস ফাউন্ডেশন বিশ্বে অন্যতম বৃহৎ দাতব্য সংস্থা। তারা এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার দান করেছেন, যা তাদের নিট সম্পদের প্রায় অর্ধেক। তাদের মূল লক্ষ্য হলো টিকা কর্মসূচি, রোগের নির্মূল ও বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য হ্রাস। বিবাহ বিচ্ছেদের পরেও তারা মানবকল্যাণের কাজে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
জর্জ সরোস, যিনি বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ও সমাজ সংস্কারক, এখন পর্যন্ত ২৩০০ কোটি ডলার দান করেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত ‘ওপেন সোশ্যালাইটি ফাউন্ডেশন’ মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা উন্নয়নের জন্য কাজ করে। তার বর্তমান সম্পদ ৭২০ কোটি ডলার হলেও, তিনি পূর্ব ইউরোপের নাগরিক স্বাধীনতা ও সাধারণ শিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
মাইকেল ব্লুমবার্গ, নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র ও ‘ব্লুমবার্গ এলপি’র প্রতিষ্ঠাতা, দান করেছেন ২১১০ কোটি ডলার, যা তার সম্পদের প্রায় ১৭ শতাংশ। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরোধিতা, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ে তার অনুদান মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিনা টিউশনে পড়াশোনা করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
অপর দিকে, অ্যামাজনের সাবেক স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি স্কট দান করেছেন প্রায় ১৯২৫ কোটি ডলার, যা তার মোট সম্পদের ৩৬ শতাংশ। তিনি শিক্ষা, বাসস্থান ও অর্থনৈতিক সমতার ক্ষেত্রে বিশেষ কাজের জন্য পরিচিত।
আরও থাকছেন মার্ক জাকারবার্গ ও তার স্ত্রী প্রিসিলা চ্যান, য who দান করেছেন ৫০১ কোটি ডলার— যা তাদের মোট সম্পদের ছোট অংশ। তারা বিজ্ঞান এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছেন।
তাদের উদ্যোগে গঠিত চ্যান-জাকারবার্গ বায়োহাব বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে সহায়তা দিচ্ছে।
এছাড়াও, স্টিভ ও কনি বালমার জলবায়ু, শিক্ষা, ও সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রায় ৫০৮ কোটি ডলার দান করেছেন। তারা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়নে নিযুক্ত।
অপরদিকে, জেফ বেজोस অর্থাৎ অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা, এখন পর্যন্ত ৪১০ কোটি ডলার দান করেছেন, যা তার প্রচুর সম্পদের অল্প অংশ হলেও বৈশ্বিক প্রভাব ফেলেছে। তিনি ‘বেজোস আর্থ ফান্ড’ গঠন করে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছেন।
শেষে, ফিল ও পেনি নাইট দান করেছেন ৩৯৮ কোটি ডলার, যা তাদের মোট সম্পদের প্রায় ১০ শতাংশ। তারা শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিশেষ সহযোগিতা দিয়ে থাকেন। তাদের অবদান নব গঠন সংক্রান্ত নতুন গবেষণা কেন্দ্র ও বৃত্তি প্রকল্প চালু করেছে।
এটি প্রমাণ করে যে, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনকুবেররা কেবল অর্থ রোজগারেই নয়, মানবতার সেবায় নিজের ত্রিভুজাকৃতির সম্পদ বিতরণেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন। অর্থ ও মানবিক কাজে এই উদারতা তাদের মানবতার চেতনা এবং সমাজের উন্নয়নে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।