বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ছয়টি সংগঠনের যৌথ চিঠিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আশংকা ও সুপারিশের দীর্ঘ তালিকা। এই সংস্থাগুলোর মতে, অবিলম্বে প্রধাননেতাদের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত, আইনি সংস্কার এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। তারা আওয়ামী লীগের ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১২টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ উত্থাপন করে দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য এক দৃষ্টিকোণ উপস্থাপন করেছে।
চিঠিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ও সরকার মানবাধিকার রক্ষা ও আইনি প্রতিষ্ঠান সমৃদ্ধ করার জন্য আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে, উপজেলা ও কংগ্রেসের বিচার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, গুম-আত্মহত্যা ও নিপীড়নের ঘটনা তদন্তের জন্য শক্তিশালী কমিশন গঠন, ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
সংস্থাগুলোর মতে, নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ক্ষমতা কমিয়ে এনে মানবাধিকারবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি, গুম-খুনের ঘটনা তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে অপরাধ ঘোষণা করে শক্তিশালী কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে নতুন আইন সংস্কার ও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রাজনীতি দমন-পীড়নের জন্য চালু হওয়া মামলাগুলো আগামী আগস্ট ২০২৪ এর আগে বা পরে প্রত্যাহার করতে হবে। জাতীয় আন্দোলন ও গণতন্ত্রের জন্য আওয়ামী লীগের উপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবি করা হয়েছে, যা রাজনৈতিক সমন্বয় ও নাগরিক অধিকারের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাদের আরও অনুরোধ, সিভিল সোসাইটি ও এনজিও সংস্থাগুলোর স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে, বিদেশি অর্থায়ন নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন জরুরি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা ও মর্যাদার স্বার্থে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ ও নির্দিষ্ট পরিস্থিতি সমাধানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ দরকার।
অন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) সহায়তা ও তদন্তে বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা ও অভিযুক্তদের হস্তান্তর দাবি করা হয়েছে, যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
সংস্থাগুলোর এই চিঠিতে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য নানা উদ্যোগের ওপর বর্ষিত হয়েছে দৃঢ় প্রত্যাশা এবং মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্থীতিশীলতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য তরজা। এই সুপারিশগুলো কার্যকর হলে দেশের ভবিষ্যৎ আরও সুন্দর, মুক্ত ও নিরাপদ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।