নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে, আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে প্রবাসী ভোটারদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা নির্বাচন অ্যাপটি উন্মুক্ত করা হবে। এই অ্যাপে প্রবাসীরা সহজে তাদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন এবং ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া আরও সক্রিয় ও সাশ্রয়ী হবে। অ্যাপের মাধ্যমে থাকবে একটি ব্যালট ব্যবস্থা যেখানে নির্বাচনপ্রত্যাশীরা দেখতে পারবেন কি তারা ভোট দিতে চান কিনা, যেখানে থাকবে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বিকল্প। এ প্রসঙ্গে বুধবার (২২ অক্টোবর) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সামনে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
নির্বাচনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করে সানাউল্লাহ বলেন, এবারের নির্বাচন একটি দৃষ্টান্তমূলক ও প্রেরণাদায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের ইতিহাসে এ ধরনের স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন দেখানোর জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটরা এবার আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন এবং তাদেরকে জনগণের চাকর হিসেবে থাকতে হবে। কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করা যাবে না, এর জন্য নির্বাচন কমিশনও কঠোর নির্দেশনা দিচ্ছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অনৈতিক বা বেআইনি নির্দেশনা থেকে দুরে থাকতে হবে। সুস্থ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, ভোটের সময় যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে, যাতে নির্বাচন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও বিতর্ক মুক্ত হয়।
নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারলে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ইসি প্রধান আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখন ভয়ের কিছু নেই। ৫ আগস্টের পরিস্থিতির পর থেকে দেশের স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। ইউএনও ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা অত্যাচারী কাজের জন্য কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে নিরপেক্ষ ও নিষ্ঠাবানভাবে কাজ করতে হবে।
এদিকে, আরেকজন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা এখন অনেক অসন্তুষ্টির মুখে। রাতের ভোটের ঘটনাগুলোর জন্য কেউ কি দায়ী? তিনি বলেন, কোনভাবেই এমন অপ্রকাশ্য ও অসাধু কাজের অনুমতি দেওয়া যাবে না। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় নির্বাচনের সাংবিধানিক ও নৈতিক মান রক্ষা জরুরি। তিনি আরও বলেছেন, নির্বাচনের জন্য কঠোর প্রস্তুতি নিতে হবে, যা প্রমাণ করবে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা দৃঢ় ও স্বচ্ছ।
তাঁরা সবাই মিলেঝুলে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আহ্বান জানান। নিরপেক্ষতা বজায় রেখে উৎসাহ না দেখিয়ে দায়িত্বশীল আচরণ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে, তারা বলেন, অতিরিক্ত সাহস বা উৎসাহ দেখানো ঝুঁকিপূর্ণ। তাই, আগের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন প্রশিক্ষণে মনোযোগ দিতে হবে। আজকের নির্বাচনী পরিবেশকে সুন্দর, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ করতে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।