গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে সোমবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনৈতিক কর্মকর্তারা। এই আলোচনা তখনই হচ্ছে যখন নতুন করে সহিংসতার খবর ছড়িয়ে পড়ছে এবং যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে চলেছে, যা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোববার এক ফিলিস্তিনি হামলার পর দুই ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হলে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান। এরপরও, ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বিশ্বাসে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়।
তবে, চলমান সহিংসতা ও উত্তেজনার কারণে এই যুদ্ধবিরতি কী দীর্ঘস্থায়ী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পরে এই চুক্তি কি প্রকৃতপক্ষে সুন্দর, স্থায়ী শান্তি আনবে, সে ব্যাপারে শংকা রয়েছে। এছাড়াও, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার ও গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন নিয়ে এখনো কোন চূড়ান্ত সমাধান হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টায় পরবর্তী ধাপের আলোচনা
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বছর থেকেই এই যুদ্ধবিরতি রক্ষায় বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বিবেচিত এই চুক্তি যাতে টিকে থাকে, সে জন্য চাপ তৈরি করে চলেছেন। সোমবার তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একাধিক কাঠামো ও পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যাতে যুদ্ধবিরতি বজায় থাকে।
ট্রাম্প আরও জানান, হামাস যদি চুক্তি লঙ্ঘন করে, তবে এর দায় সরাসরি সংগঠনের নেতৃত্বের নয়, বরং কিছু বিদ্রোহী কর্মীর। তিনি বলেন, यदि হামাসের নেতারা নিজেদের দায়িত্বে না থাকেন, তবে প্রয়োজনে তাদের নিশ্চিহ্ন করবেন, তবে এতে মার্কিন স্থল সেনা পাঠানো হবে না।
মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারর্ড কুশনার সোমবার ইসরায়েলে পৌঁছেছেন, যেখানে তারা যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল করার পাশাপাশি ২০ ধাপের শান্তি পরিকল্পনার পরবর্তী কঠিন পর্যায় নিয়ে আলোচনা করবেন।
অপরদিকে, মঙ্গলবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ইসরায়েল সফর করবেন। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, সেখানে আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা হবে।
পাশাপাশি, কায়রোতে হামাস প্রতিনিধিদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক স্থির হয়েছে। এতে ট্রাম্প প্রশাসনের শান্তিচুক্তিকে স্থায়ী করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এর আয়োজন করছে।
এদিকে, গাজার ভিতরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ‘হলুদ লাইনের’ কাছে সোমবার ট্যাঙ্ক থেকে হামলার ঘটনায় আরও তিনজন নিহত হয়েছেন, জানিয়েছে ফিলিস্তিনি চিকিৎসকেরা। সেনাদের মতে, ওই সীমারেখা অতিক্রম করে হামাসের যোদ্ধারা ঢোকার চেষ্টা করছিল, ফলে বিমান হামলা চালানো হয়। গাজার বেশ কিছু বাসিন্দা জানাচ্ছেন, এই বিভ্রান্তির কারণ হল, স্পষ্ট সীমারেখা না থাকায় পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে পড়েছে।