চলতি বছর এপ্রিলে জম্মু কাশ্মীরে সংঘটিত এক সন্ত্রাসী হামলার কারণে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সিন্ধু পানি চুক্তি বাতিলের পাশাপাশি ভারতের উদ্যোগে চেনাব নদীতেও একাধিক বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, পাকিস্তানকে শাস্তি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের মতো পানিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করছে আফগানিস্তান।
সম্প্রতি সীমান্ত সংঘর্ষের জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক খুবই কঠিন হয়ে উঠেছে। এর বিপরীতে, আফগান তালেবান সরকার ভারতের প্রতি একান্ত সমর্থন ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক দেখাচ্ছে। এই অবস্থায়, আফগানিস্তান কুনার নদীর ওপরও বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যা পাকিস্তানের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি হয়ে উঠতে পারে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ জলপ্রবাহ এই কুনার নদী। আফগানিস্তানের এই পদক্ষেপের ফলে সম্ভাব্য ভবিষ্যতে পাকিস্তানে পানি সংকটের সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে আফগানিস্তানের উপ-তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী মুহাজের ফারাহি বলেন, তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা কুনার নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বিদেশি ঠিকাদারদের জন্য অপেক্ষা না করে যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
ফারাহি আরও জানান, পানি ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে দেশের স্বার্থে দ্রুত নির্মাণকাজ শেষ করতে এবং দেশীয় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অফিসিয়ালভাবে, আফগানিস্তান বলছে যে তাদের নিজস্ব জলসম্পদ ব্যবস্থাপনার অধিকার রয়েছে। মন্ত্রী মোল্লা আব্দুল লতিফ মনসুর উল্লেখ করেন, মহামান্য আখুন্দজাদা কুনার নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিদেশি কোম্পানির অপেক্ষা না করে দেশীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তি করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মনে হচ্ছে, আফগানিস্তানের এই পদক্ষেপ পাকিস্তানে নদী দিয়ে জলপ্রবাহের পরিমাণ কমিয়ে দেবে। কুনার নদী দীর্ঘ ৪৮০ কিলোমিটার বিস্তৃত, যা পূর্ব আফগানিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। এটি হিন্দুকুশ পর্বতমালার হিমবাহ ও তুষার দ্বারা পুষ্ট এবং সিন্ধু নদীর অববাহিকার অংশ।


















