বগুড়ার নন্দীগ্রামে এখনও শুরু হয়েছে আগাম জাতের আমন ধানের কাটা এবং মাড়াইয়ের কাজ। এই জাতের ধান দ্রুত পাকাপোক্ত হয়ে যায়, তাই চাষিরা খুব শীঘ্রই ঘরে তোলার কাজে মনোযোগী হচ্ছেন। এই আগাম ধান চাষে কৃষকদের মাঝে যেমন আগ্রহ বেড়েছে, তেমনি ফলনও বেশ ভালো হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। চাষিরা বলছেন, এই বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভাবে সিয়ামসাধনের ফলন অত্যন্ত সুস্থ ও বাম্পার হয়েছে। আমনের পর একই জমিতে তারা রবিশস্যের চাষও করছেন, যা আয় বাড়ানোর নতুন উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়, যেমন ঢাকইর, নামুইট ও বদলাশনে, এখন ধানের শীষ ঝরঝর করে পড়ছে। মাঠে মাঠে চোখে পড়ছে সোনালী ধানের সমারোহ। ধান কাটাকাটির কাজের জন্য কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মোট ১৯ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এর চেয়েও বেশি জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। বিভিন্ন ইউপি ও পৌরসভার কৃষকরা নানা জাতের ধান চাষ করেছেন, যার ফলনও সুফল দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, এই বছর প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগের কারণে ফলন খুবই ভাল হয়েছে।
ঢাকইর গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, আমি আট বিঘা জমিতে মিনিকেট ও ব্রিধান-৭৫ জাতের ধান চাষ করেছি। ফলন আশানুরূপ হয়েছে এবং ব্রিধান-৭৫ এর ধান প্রতি মন ১২২০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। মিনিকেট ধানের দাম আরও বেশি হলেও আমি এখনো বিক্রি করিনি।
রণবাঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিনহাজুর রহমান হাবিব বলেন, আমাদের এলাকায় এখন ধান কাটা-মাড়াই জোরেশোরে চলেছে। এই কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা, কারণ আসছে নববর্ষের নবান্ন উৎসব। এই উৎসবে নতুন ধানের চাল দিয়ে পিঠা, পায়েস, এবং ক্ষীরের মতো নানা ধরনের খাবার তৈরি করে অতিথি আপ্যায়ন করা হয়। বাঙালির ঐতিহ্য অনুযায়ী, পয়লা অগ্রহায়ণ থেকে শুরু হয় এই উৎসব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, আগাম জাতের ধানের কাটা-মাড়াইয়ের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যে পুরোপুরি ধরবে। আশাবাদী, এবারও কৃষকের ফলন ভালো হবে এবং তারা ধান বিক্রি করে লাভবান হবেন। কৃষকরা এখন ধান কাটার পাশাপাশি রবি মৌসুমের রবিশস্যের উৎপাদনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।


















