গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি ও গাজীপুর ২ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. শওকত হোসেন সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিফলিত হওয়া একটি অপপ্রচারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, 정부 তার বিরুদ্ধে প্রচারিত ‘চাঁদাবাজির’ ভিডিওকে সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা, বিকৃত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। আজ রবিবার দুপুরে গাজীপুর প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই ভিডিওটির বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৫ এ একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শওকত হোসেন মন্তব্য করেন, ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরে জানতে পেরেছেন যে সামাজিক মাধ্যমে ১০ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে, যেখানে একটি গাড়ি বিক্রির লেনদেনের দৃশ্যকে বিকৃত করে ‘চাঁদাবাজির’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, একপেশে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, ২০২৪ সালের ২৮ জুলাই আফজাল হোসেন তার ছেলের প্রতিষ্ঠান ‘এম/এস কার সাম্রাজ্য’ থেকে ৪০ লাখ টাকায় একটি নোয়া স্কয়ার গাড়ি ক্রয় করেন। ওই সময় তিনি ১০ লাখ টাকার চেক জামানত হিসেবে দিয়ে গাড়ি হস্তান্তর করেন। পরে ব্যাংক ঋণ নিয়ে বাকি টাকা ধাপে ধাপে পরিশোধ করেন। কিন্তু সেই সময়ই আফজাল হোসেন গোপনে একটি ভিডিও ধারণ করেন এবং পরে সেটি বিকৃতভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন, যেন এটি চাঁদাবাজির লেনদেন হিসেবে দেখানো হয়।
শওকত হোসেন বলেন, এই অপপ্রচারটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শত্রুতা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি যোগ করেন, যারা এখন নিজেরেকে ‘জিয়া মঞ্চের সভাপতি’ বলে পরিচিত, তারা আগে গাজীপুরের যুবলীগের সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন এবং তাঁর ছবি পোস্টার ও লিফলেটে ব্যবহার করেছিলেন। জুলাই আন্দোলনের পর তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করে সুবিধাবাদী ভূমিকা নিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের পর বিএনপি ও জাতীয়তাবাদী দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে নেগেটিভ মনোভাব তৈরি করতে কোনো আপোষ না করে বিভিন্ন মহল আন্দোলনকারী নেতাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর কাজে নেমেছে। এই ভিডিও প্রচারটিও তারই অংশ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এছাড়া, কাশিমপুর জমিদার বাড়ি দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০০৫ সালে তিনি সরাসরি ওই বাড়ির অর্ধেক অংশ ক্রয় করেন। ২০১২ সালে তখনকার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের নির্দেশে তাঁর অনুসারীরা বারবার হামলা চালালে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। ২০২৩ সালে আদালত সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে সেখানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং নতুন রেকর্ডে (বি.এস.পর্চা) তাঁর মালিকানা স্বীকৃতি প্রদান করে।
শওকত হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মামলা হয়েছে, তাঁদের বিভিন্ন থানায় কারাবাস ও হয়রানি করা হয়েছে। তবুও তিনি নৈর্ব্যক্তিকভাবে তার আদর্শ থেকে একচুলও বিচ্যুত হননি। তিনি যোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা যখন মাঠে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়, তখন সামাজিকভাবে তাকে হেয় করার জন্য কুৎসা রটানোর অপচেষ্টা চালায়। গাজীপুরের সাধারণ মানুষ জানেন, তিনি জনগণের জন্য কাজ করছেন। তিনি নিজে ও তার পরিবার উভয়ই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তিনি ইতিমধ্যে উচ্চ আদালতে মামলা করেন এবং প্রয়োজন হলে আরও আইনি পদক্ষেপ নেবেন। তিনি চান, এই অপপ্রচারকারীরা নিজেকে প্রমাণ করার জন্য আদালতে আসুক। তিনি বিশ্বাস করেন, সত্য একদিন অবশ্যই প্রকাশ পাবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, বশির আহাম্মেদ বাচ্চু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ূন কবির রাজু, জয়নাল আবেদীন তালুকদার, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রহিম কালা, কোনাবাড়ি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, সদর মেট্রো থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ মোস্তফা নীনা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

















