নির্বাচকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ভারতের আপিলের চতুর্থ দিনের শুনানি অব্যাহত রয়েছে। এই শুনানিতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আজ মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির বেঞ্চে এই গুরুত্বপূর্ণ শুনানি শুরু হয়।
এর আগের দিন, ২৩ অক্টোবর, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আনার জন্য করা আপিলের তৃতীয় দিনের শুনানি সম্পন্ন হয়। সে সময় ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী ইন্টারভেনর হিসেবে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
অপরদিকে, ২২ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনটির শুনানি শেষ হয়, যেখানে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। এই আপিলের প্রথম দিন, ২১ অক্টোবর, শুরু হয়েছিল।
উল্লেখ্য, এর আগে ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) অনুরোধ করলে তা অনুমোদন হয়। এরপর,দলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিও আপিল করেন, যেমন ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ার।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংরক্ষণের জন্য ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে ত্রয়োদশ সংশোধনী আনা হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে কিছু আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালে আদালত এ রিট খারিজ করে, এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বৈধ ঘোষণা করে। সেটির বিরুদ্ধে দীর্ঘ শুনানি ও আপিলের মাধ্যমে ২০১১ সালে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয় এবং সেই রায়ে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়।
এরপর, ২০১১ সালে সংশোধনী বাতিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন আইনি লড়াই চালিয়ে যায়। এরপর, ২০১৫ সালে সংসদে পাস হয় পঞ্চদশ সংশোধনী আইন, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়।
২০১৬ সালে বিভিন্ন ব্যক্তি, including বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এড. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান এই রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আপিল করে। পরবর্তীতে ২০২২ সালে বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং অন্যান্য ব্যক্তিরাও এই বিষয়ে আবেদন করেন।
এখন, চতুর্থ দিনের শুনানি চলাকালীন এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার পাশাপাশিই জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করছেন। এই আপিলের ফলে দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে সম্পূর্ণভাবে প্রভাবিত করতে পারে এমন সাহসী সিদ্ধান্তের প্রত্যাশা করছে সবাই।

















