কিশোরগঞ্জের ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে স্থানীয়রা এবার নৌপথে অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুরের দিকে মেঘনা নদীর ঘাটে এক ঘণ্টা নৌচলাচল বন্ধ ছিল, যা শেষের দিকে কঠোর আন্দোলনের সূচনালাভের জন্য পরিকল্পিত। কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভকারীরা ঘোষণা করেন, আগামী বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সড়ক, রেল ও নৌপথে একযোগে অবরোধ চালানো হবে।
অবরোধের এই কর্মসূচি সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে ভৈরব বাজার লঞ্চঘাট ও কার্গোঘাটে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হয়। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, গত সোমবার শান্তিপূর্ণ রেল অবরোধের সময় ট্রেনচালকের জোরে হুইসেল বাজানোর কারণে কিছু কিছু পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে, যার জন্য তারা স্টেশন মাস্টার ও রেলওয়ে পুলিশের অপরাধী বলে দাবি করেন। কিন্তু তাদের দাবির প্রতি অঙ্গীকার প্রকাশ করে, তিনি বলেন, “আমরা প্রয়োজনে মামলা করব, কিন্তু দাবির সংগ্রাম বন্ধ করব না।”
ভৈরবের এই আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরেই জেলার দাবি জানিয়ে আসছে। তারা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে গেজেটের মাধ্যমে ঘোষিত ৬৫তম জেলা হিসেবে ভৈরবের স্বীকৃতি এখনো প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। আন্দোলনকারীরা আরো জানিয়েছেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন, যেমন সড়ক ও রেল পथে ব্লকেড এবং নৌপথে অবরোধ। সংগঠনের নেতারা বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে আমরা আমাদের দাবি জানাচ্ছি।”
বাঁশগাড়ি জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন ছাত্র রায়হান উল্লেখ করেছেন, “ভৈরবকে জেলা ঘোষণা করার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি, পথে ব্যারিকেডও দিয়েছি। প্রশাসনের নির্দেশ অনুসারে তা তুলে নেওয়া হয়েছে।”
অতিথি বক্তারা, যেমন মাওলানা সাইফুল ইসলাম শাহারিয়া, গণঅধিকার পরিষদের নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল ও ছাত্রনেতা জুনাইদ, তাদের বক্তব্যে এই আন্দোলনের গুরুত্ব ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
নৌপথে অবরোধ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, যেমন ভৈরব উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এএইচএম মো. আজিমুল হক ও নৌথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান উপস্থিত থাকেন যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
ওসি মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, “আজকের কর্মসূচি সফলভাবে শেষ হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার আমরা সড়ক, রেল, ও নৌপথে একযোগে অবরোধ করব।”
উল্লেখ্য, এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হলো ২০০৯ সালে গেজেট আকারে ঘোষণা হওয়া ৬৫তম ভৈরব জেলা দ্রুত প্রতিষ্ঠার জন্য দাবী। আন্দোলনকারীরা মনে করেন, এই দাবি আদায়ের জন্য তারা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।


















