নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় গত কয়েকদিনের প্রবল বৈরী আবহাওয়া, ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বর্ষণের ফলে পাকা ধানসহ বিভিন্ন শীতকালীন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হঠাৎ করে এই অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়া কৃষকদের মুখে হতাশার ছাপ ফেলে দিয়েছে।
সোমবার (২ নভেম্বর) সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, একটানা ভারী বর্ষণের سبب মাঠের ফসল পানিতে ডুবে গেছে। হাওয়ার দমকায় অনেক মাঠে পাকা আমন ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। ফলে পুরো মাঠ জুড়ে দেখা যাচ্ছে পানিবন্দী ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের ছবি, যা কৃষকের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
প্রায় ১০টি ইউনিয়নের কৃষকদের মধ্যে এই বৃষ্টিপাতের প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। কৃষকরা বলছেন, এ মরসুমের শেষের দিকে এসে ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কিন্তু হঠাৎ এই ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ধানের গাছগুলি পড়ে গেছে, দানা কালচে ও কোপানোর উপযোগী অবস্থা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে আগাম ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, শুধু ধানই নয়, শীতের আগাম সবজির ক্ষেত যেমন মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক ও পালং শাকও পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গায় জমির মাটি নরম হয়ে গিয়ে গাছগুলো উপড়ে পড়েছে, যা ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দক্ষিণ সুন্দরডাঙ্গার কৃষক অধীর চন্দ্র বলেন, ধান কাটার খুব কাছাকাছি সময়ে এভাবে বৃষ্টিপাত হওয়ায় সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। এখন কি করব, তা ভেবে পাচ্ছি না।
উপজেলা কৃষি অফিসার মীর হাসান আল বান্না জানিয়েছেন, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হলে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে।
আবহাওয়া অফিসের সূত্রে জানা গেছে, আগামী এক থেকে দুদিনের মধ্যে বর্ষার পরিমাণ কমে আসতে পারে, তবে নিম্নচাপের কারণে আকাশ মেঘলা থাকায় মাঠে ফসল শুকাতে কিছু সময় লাগবে।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, এই আকস্মিক বৃষ্টি তাঁদের জন্য নতুন দুশ্চিন্তা তৈরি করেছে। তারা সরকারের স্বল্পমেয়াদি ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহায়তার দ্রুত প্রয়োজনের দাবি জানান।
আজকের খবর


















