আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নিশ্চিত করেছেন যে, সরকার নিজস্ব পদ্ধতিতে বহু আলোচনা পরিচালনা করেছে। এখন আর সরকারের উদ্যোগে আলোচনা নয়; বরং রাজনৈতিক দলগুলো নিজ উদ্যোগে বসে মতামত সংগ্রহ করবে এবং একসঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা প্রণয়ন করবে, এটি তাঁর প্রত্যাশা। সোমবার (৩ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বিষয়টি স্পষ্ট করেন। এর আগে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে একটি বিশেষ উপদেষ্টা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলোচনা চালিয়ে গেছে। তারা কঠিন সময়েও একত্রে আন্দোলন চালিয়েছে, একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই দলগুলো নিজেদের উদ্যোগে আলোচনা করে একটি একক দৃষ্টিভঙ্গি ও নির্দেশনা তৈরি করতে সক্ষম হবে।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি এক দলের পক্ষ থেকে আলোচনা করার আহ্বান জানানোর খবর এসেছে, যা তিনি স্বাগত জানান। আদান-প্রদানকৃত ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবনাগুলোর ভিত্তিতে, জরুরি ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় মত প্রকাশ করা হয়। বিশেষ করে, দীর্ঘদিন ধরে চলমান ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মূল অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে যেন নিজেরাই আলোচনা করে সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সে জন্য সরকারের জন্য ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেয়া জরুরি। এ সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সহজ হবে এবং এখন আর দেরি করার সময় নেই বলে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে আগামী সংসদ নির্বাচনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যেখানে সরকার তাদের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা প্রকাশ করে।
সভার মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয় এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলের প্রতি আস্থা বহাল রাখা হয়। আলোচনায় উপস্থিত হয়, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই মাসের জাতীয় সনদ, সংবিধানে পরিবর্তন, গণভোট আর এর বিষয়বস্তু সম্পর্কিত বিষয়গুলোর ব্যাপারে।
তবে, সভায় লক্ষ্য করা গেছে যে, কিছু সংস্কার সংক্রান্ত সুপারিশ নিয়ে দলের মধ্যে মতভেদ রয়েছে, যেমন গণভোটের সময়, তার বিষয়বস্তু এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়। ফলে, এসব বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করা হয়।
প্রথম প্রশ্নে আসিফ নজরুল বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে আন্দোলন করে এসেছে। আমরা তাদের সময় দিতে চাই। তারা যাতে নিজেরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এগিয়ে যেতে পারে, আমরা সেটাই চাই।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা কোনও সময়সীমা চালিয়ে দিচ্ছি না। আমরা অপেক্ষা করব, তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাবে এবং প্রয়োজন হলে সিদ্ধান্ত নেবে। তৎপরতাও প্রকাশ করেন যে, সরকার নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবে, কোনো আল্টিমেটাম দেয়া হয়নি।


















