ট্রাভেল এজেন্সি খাতের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন (আটাব) এর সাধারণ সদস্যরা বর্তমান ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ-২০২৫ (খসড়া) এর কিছু ধারা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, এই খসড়া আইন দেশের ট্রাভেল শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে, ובעיקר লাখো মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর হোটেল ভিক্টরি রোডের সামনে আটাবের সদস্যরা মানববন্ধন করেন। সেখানে তারা নাড়ির স্বার্থের বিষয়টি তুলে ধরে বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন- “যে আইন জীবনযোড়ায় বাঁধা সৃষ্টি করে, তা জনগণের জন্য নয়”, “বিটুবি বন্ধ নয়, সমাধান চাই” এবং “আমরা ভ্যাট দিই, ট্যাক্স দিই, তবুও কেন আমাদের ব্যবসা বন্ধের আইন”। তারা আরও দাবি করেন, সকল ট্রাভেল এজেন্সীর জন্য উড়োজাহাজ টিকিট উন্মুক্ত করতে হবে এবং অবিলম্বে এই খসড়ার চাপিয়ে দেওয়া কিছু বিধান বাতিল করতে হবে।
অতীতে দেশের ট্রাভেল শিল্পের জন্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, নতুন এই আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাগুলোর ওপর নানান অপ্রয়োজনীয় শুল্ক ও বাধা চাপানোর অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে তারা সোচ্চার। তারা বলছেন, ১০ লক্ষ টাকা জামানত প্রস্তাবটি অত্যন্ত অযৌক্তিক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোর জন্য পরিচালনা কঠিন করে তুলবে। তদ্ব্যতীত, অন্য এজেন্সির সাথে টিকেট ক্রয়-বিক্রয় বন্ধের বিধান ব্যবসার স্বচ্ছতা ও মানের জন্য ক্ষতিকর, ফলে যাত্রীর সেবার মান কমে যাওয়ার পাশাপাশি বেকারত্ব বাড়বে বলে সতর্ক করছেন বক্তারা। একইসাথে, জেল-জরিমানা বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহার করে আগের পরিস্থিতি বজায় রাখতে হবে।
আটাবের সাধারণ সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, অতীতে বিভিন্ন নীতিনীতির দ্বারা ট্রাভেল ট্রেডের ওপর হিংস্র চাপ অতিক্রম করেছে সংগঠনটি, কিন্তু এখন দুর্যোগের মুহূর্তে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী ব্যাকরণ নেই বলে মনে হয়। তারা মনে করেন, সরকারী কিছু চাপ ও চাপানো নীতি ভেঙে একটি অংশগ্রহণমূলক ও বাস্তবসম্মত আইন তৈরি করা খুবই জরুরি।
বক্তারা আরও বলেন, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্টদের ক্ষেত্রে শাস্তির বিধান থাকলেও এটি যেন নিরপরাধ ব্যক্তিদের ক্ষতি না করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দেশের পর্যটন ও ভ্রমণ শিল্পের টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্যবসা-বান্ধব ও ন্যায্য আইন প্রণয়নে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
বক্তারা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সংগঠনের নেতৃত্ব থাকলে সরকারের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্যিক আলোচনা করে একটি সহানুভূতিশীল ও বাস্তবসম্মত নতুন আইন প্রণয়ন সম্ভব ছিল। তারা আরও দাবি করেন, সংগঠনের কিছু নেতার চাপ ও ষড়যন্ত্রের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যা পুরো ট্রাভেল শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
আটাবের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত ট্রাভেল এজেন্সি মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় আইন সংশোধন ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। তিনি আরও বলেন, অধ্যাদেশ-২৫ এর কয়েকটি ধারা বাতিলের জন্য তিনি দৃढ़ভাবে জোর দেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক মহাসচিব আসফিয়া জান্ণাত সালেহসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, দেশের বিমান পরিবহণ ও পর্যটন খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ ‘বেসামরিক বিমান চলাচল (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ ও ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) সংশোধন অধ্যাদেশ-২০২৫’ এর খসড়া অনুমোদন করে সরকার। উল্লেখ্য, এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের পর্যটনের খাতকে আরও এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।


















