রাঙ্গামাটির পার্বত্য অঞ্চলে কোটা বৈষম্য ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের প্রতিবাদে আজ দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত হরতাল চলছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে শুরুর এই হরতাল চালবে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এলাকাটিতে শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক ও নৌপথে হরতাল পালিত হচ্ছে, সংগঠনগুলো জানিয়েছে। জরুরি প্রয়োজনীয় যানবাহন এই অবরোধের বাইরে রাখা হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে শহরের বনরূপায় একটি রেস্তোরোাঁয় ‘কোটাবিরোধী ঐক্যজোট, সাধারণ শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হরতালের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন সংগঠন যেমন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা শাখা সমর্থন জানায়। সন্ধ্যায় শহরে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যা ব্যাপক সমর্থন পায়। এখন শহর ছাড়াও বাঘাইছড়ি, লংগদুসহ অন্যান্য উপজেলায় পিকেটিং চলছে।
প্রাথমিকভাবে সকাল থেকেই সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখান থেকে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানসহ দূরবর্তী এলাকাগুলোর কোন যানবাহন চলাচল করেনি। নৌপথেও লঞ্চ ও বোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। শহরের একমাত্র গণপরিবহন সিএনজি অটোরিকশাও বন্ধ থাকায় সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা মোতায়েন রেখেছে যাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে।
জানিয়ে রাখা প্রয়োজন, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে রাষ্ট্রের ৭ শতাংশ কোটা রাখার পাশাপাশি বাকিটা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবি জানানো হয়। এ নিয়ে রাঙ্গামাটির পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার বলেছিলেন, ‘রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী আমাদের পরিচালনা চলে, কোনও মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করব না।’ এ কথা শুনে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
তদ্ব্যতীত, পরিষদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কোনও কোটা উল্লেখ না থাকাসহ শূন্যপদের সংখ্যা স্পষ্ট না হওয়া নিয়ে অভিযোগ তোলে ‘কোটাবিরোধী ঐক্যজোট, শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ’। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ পরিস্থিতি সমাধানে অবিলম্বে সকল পক্ষের মাঝে সংলাপ ও সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে।


















